নারী নিকাহ্ রেজিস্ট্রার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার দাবি
নারী নিকাহ্ রেজিস্ট্রার বিষয়ক হাইকোর্টের রায়টি পুনর্বিবেচনা দরকার বলে মনে করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)। মঙ্গলবার বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দেওয়া হাইকোর্ট বেঞ্চের সাম্প্রতিক রায়ে বিএনপিএস হতবাক ও ক্ষুব্ধ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালিত হয় মহান সংবিধানের আলোকে। সংবিধান অনুযায়ী যে কোনো কাজে নারীর যুক্ত হওয়ায় কোনো বাধা নেই। কাজেই এই রায় সংবিধানের সাথে সম্পূর্ণরূপে সাংঘর্ষিক। একই সঙ্গে এই রায় সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ, সিডও সনদ, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির সঙ্গেও অসামঞ্জস্যপূণ। আমরা এই রায়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাই।
আরো বলা হয়েছে, রায়ের পর্যবেক্ষণে মাসিক বা ঋতুস্রাবকে নারীর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার বা কাজি হবার প্রধান অন্তরায় হিসেবে ভাবা হয়েছে। এটা শুধু হাস্যকর নয়, আপত্তিকরও। কারণ মাসিক প্রাকৃতিক নিয়মে সংঘটিত একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। যার ভিত্তিতে মানব জীবনের প্রবাহ সচল থাকে। মাসিক হয় বলে নারী তার পারিবারিক, সামাজিক, দাপ্তরিক, রাষ্ট্রীয় কোনো কাজ থেকেই রেয়াত পায় না। এ সময় তাদের রান্নাবান্নাসহ বাড়ির অন্যান্য কাজ করতে হয়। অফিসের দায়িত্ব সামলাতে হয়, কাছে-দূরে ভ্রমণ করতে হয়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর পরিচালনা করতে হয়। সুতরাং মাসিকের দোহাই দিয়ে নারীকে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হবার অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রায়ের পর্যবেক্ষণে নারী নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে রাত-বিরেতে সব জায়গায় যেতে পারবেন কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এ পর্যবেক্ষণটিও একপেশে। কারণ কোনো রেজিস্ট্রার কোনো বিশেষ সময়ে বিশেষ জায়গায় দায়িত্ব পালনে যেতে অপারগ হতে পারেন, সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে অন্য রেজিস্ট্রারগণ দায়িত্ব পালন করবেন।