বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » লাইফ স্টাইল » গ্রামীণ সম্প্রদায়ের সফল উদ্যোক্তা মরিয়ম বেগম

গ্রামীণ সম্প্রদায়ের সফল উদ্যোক্তা মরিয়ম বেগম 

024111_bangladesh_pratidin_Morium-Beguem

মরিয়ম বেগম একজন প্রশিক্ষিত ট্রেডিশনাল বার্থ অ্যাটেন্ডেন্ট (টিবিএ) হিসেবে গত ৪০ বছর ধরে কমিউনিটি পর্যায়ে সেবা প্রদান করে আসছে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চোকরদা ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি ছোট্ট প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আগত মরিয়ম ১৫ বছর বয়সে স্বল্প বেতনের একজন কর্মচারীর (অফিস মেসেঞ্জার) সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি খুব অল্প বয়স থেকেই গ্রামীণ সম্প্রদায়ের দরিদ্র গর্ভবতী ও সন্তান প্রসবকারী নারী যারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত, তাদের সেবা প্রদানে সর্বদা সহানুভূতিশীল এবং সক্রিয় ছিলেন।

তার গ্রামে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ক্ষমতায়ন এবং স্বনির্ভরতার ধারণাগুলি প্রায় ছিল না বললেই চলে।  তিনি ২০১৬ সালে এসএমসি’র গোল্ড স্টার নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত কমিউনিটি সেলস এজেন্টসদের (বর্তমানে গোল্ড স্টার মেম্বারস হিসেবে পরিচিত) একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যেখানে তিনি স্বাস্থ্য বার্তাগুলির প্রচার এবং জনস্বাস্থ্য পণ্যসমূহের বিক্রয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবাসমূহ এবং পণ্যের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি তার জনহিতকর কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নিজেকে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে সংকল্পবদ্ধ ছিলেন।

তিনি এসএমসি’র কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার স্বাস্থ্য বিষয়ক পণ্য কিনে তার নতুন ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং তার নির্ধারিত এলাকার মধ্যে বিক্রি করতে শুরু করেন। প্রথম মাসেই তিনি এই ব্যবসায় লাভজনক ফলাফল দেখতে পেয়েছিলেন এবং বর্তমানে তার মাসিক বিক্রয় ১০,৫০০ টাকা এবং  মুনাফা ২,৫০০ টাকা। তিনি গর্ভধারণের সঠিক সময় এবং বিরতি, শিশু জন্মের ১,০০০ দিনের যত্ন যথা গর্ভকালীণ যত্ন, নিরাপদ প্রসব, সন্তানের জন্ম, জন্মপরবর্তী যত্ন, শিশুকে বুকের দুধ পান করানো, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট পাউডার, ওরস্যালাইন এবং শিশুর ডায়রিয়ায় জিংক-এর ব্যবহার, পরিবার পরিকল্পনার দীর্ঘমেয়াদী এবং স্থায়ী পদ্ধতি ও যক্ষ্মা বিষয়ক রেফারেল সেবা এবং  কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচার করে থাকেন।

মরিয়ম তার ইতিবাচক বৈশিষ্টের কারণে সম্প্রদায়ের কিশোর বয়সী মেয়ে এবং যুবতী নারীদের মধ্যে “ডাক্তার আপা” (বোন) নামে সুপরিচিত।

পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি সত্যিই আমার কাজটি উপভোগ করি এবং আমার ব্যবসা চালিয়ে যেতে আমার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে আন্তরিক সমর্থন পেয়েছি। সন্তানদের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত পারিবারিক বিষয়গুলি নিয়ে আমরা এখন সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেই, যা আমি আগে কখনো করতে পারিনি। এসএমসি’র  জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পণ্যসমূহের মাধ্যমে সমাজের মানুষদের সেবা প্রদানের পাশাপাশি আমার ব্যবসাকে প্রসারিত করে আরও সাফল্য অর্জন করতে চাই”।

মরিয়ম প্রমাণ করেছেন স্বপ্ন দেখতে এবং তাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে কেউ দৃঢ় প্রত্যয়ী হলে কোনও সীমাবদ্ধতাই তাকে থামাতে পারে না।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone