দুই বছরেও শেষ হলো না ৪৮ ঘন্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যারহস্য ভেদ হলো না দুই বছরেও। হত্যাকাণ্ডের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনি গ্রেপ্তার করার ঘোষণা দেওয়া হলেও তিন তত্ত্বে চলে গেছে দুই বছর। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা গ্রিলকাটা চোরের পেছনে ছুটেছেন কখনো। আবার বলেছেন, রুনির মোবাইল ফোনের যোগাযোগেই হত্যার রহস্য আছে। ডিএনএ (বংশগতির ধারক) পরীক্ষায় প্রতিবেদনের সূত্রেও খুনি শনাক্তের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তাঁরা। এত কিছুর পরও একই তিমিরে রয়ে গেছে রহস্য।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। আজ তাঁদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
তদন্তের শুরুতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রুনির ঘনিষ্ঠজন ও সহকর্মীদের দিকেই সন্দেহের তীর ছুড়েছিলেন। সে অনুসারে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এ নিয়ে একটি বেসরকারি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান থেকে আলামত সংগ্রহসহ এর মালিককেও প্রশ্নের মুখোমুখি করা হয়। আবার কখনো পেশাদার অপরাধীর দিকে তীর ছুড়েছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কার্যত কয়েক শ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তির ব্যাপক সহায়তা নিয়েও লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তারা। উল্টো তদন্তকারীদের আচরণ ও বক্তব্যে রহস্য বেড়েছে। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ও খুনিদের রক্ষার কৌশলসহ নানা অভিযোগ জোরালো হয়েছে তাঁদের কর্মকাণ্ডে।
দেশব্যাপী চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তির প্রাক্কালে গত রবিবার তদন্ত সংস্থা র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল জিয়াউল আহসান জানিয়ে দিলেন, ‘আমরা আসলে কিছুই পাইনি। ডিএনএ টেস্টে অনেকগুলো রিপোর্টই এসেছে। সেখান থেকে খুনি শনাক্তের মতো কিছু পাওয়া যায়নি।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল মনে করেন, এ হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্র দুইভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু সাংবাদিক পরিচয়ের জন্য নয়, সাধারণ নাগরিক হিসেবেও সাগর-রুনিকে নিরাপত্তা রাষ্ট্র দিতে পারেনি। এরপর খুনিদের শনাক্ত করতেও ব্যর্থ হলো। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকার দুই দিনের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিলেও দুই বছর পেরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় সরকারের সদিচ্ছার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।’