বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » স্কুল-কলেজ খোলার ২ মাসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা নয়

স্কুল-কলেজ খোলার ২ মাসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা নয় 

155036_bangladesh_pratidin_exam

মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবশেষে খুলতে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ খোলার পর কীভাবে ক্লাস-পরীক্ষা হবে, সে বিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম দুই মাসের মধ্যে এমন কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা যাবে না, যা শিক্ষার্থীর উপর চাপ তৈরি করতে পারে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আকর্ষণ বাড়াতে প্রতিষ্ঠান ভবন রং করা, বিভিন্ন ছবি দিয়ে শ্রেণিকক্ষ ডেকোরেশন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

সেইসঙ্গে মাউশি আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। ৩৯ পৃষ্ঠার এ নির্দেশনা ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিকে নতুন স্বাভাবিকতা (নিউ নরমাল) হিসেবে বিবেচনা করে এই নির্দেশিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে।

‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুকরণ’ শীর্ষক এই নির্দেশিকায় স্কুল-কলেজ খোলার আগে পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আকর্ষণীয় করাসহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শিফটিং করে নিরাপদ দূরত্বে ক্লাসে বসা, প্রথম ১৫ দিন সহ-শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি এবং দুই মাসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে এতে।

কবে খুলবে?
নির্দেশিকায় বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে থেকে পুনরায় চালু হবে তা কেন্দ্রীয়ভাবে সরকার ঘোষণা করবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালুর আগে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এবং প্রতিষ্ঠান এলাকার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হলে সংক্রমণ আরও বাড়িয়ে দেবে কিনা তা পর্যালোচনা করতে হবে। চালু করতে হলে কী কী পদক্ষেপ, তাও জানতে হবে।

সংক্রমণের বিস্তার রোধে ব্যবস্থা :
কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় সবার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষার্থীরা যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলাফেরা করতে পারে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থারও পরিকল্পনা নিতে হবে।

নিরাপদ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা
এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কতজনকে একই শিফটে এনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে তা পরিকল্পনা করা হবে। সেক্ষেত্রে বসাতে হবে ৩ ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করে। শিক্ষার্থীর চাহিদা ও অভিভাবকের মতামতের ভিত্তিতে এবং প্রতিষ্ঠানের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম ১৫ দিন কোনো একটি শ্রেণি কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষা কার্যক্রম একই সঙ্গে চালু করতে হলে কতটি শিফট প্রয়োজন হতে পারে এবং প্রতিটি শিফটের জন্য কর্মঘণ্টা কতটুকু হবে তা নির্ধারণের পরিকল্পনাও নিতে হবে।

আনন্দঘন শিক্ষা কার্যক্রম :
দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে তা থেকে মুক্ত করার জন্য নিরাপদ ও আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রথম ১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম কেমন হবে, কতটা সময় শিখন কার্যক্রম এবং কতটা সময় মনোসামাজিক কার্যক্রমের ব্যবস্থা থাকবে তার পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। প্রথম এক বা দুই সপ্তাহ পাঠ্যক্রমভিত্তিক শিখনের উপর গুরুত্ব না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মনোসামাজিক সহায়তা এবং মানসিক ও শারীরিক কার্যক্রমের মধ্যে খেলাধুলা, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গাছ লাগানো ও পরিচর্যা, সঙ্গীত চর্চা, ছবি আঁকা, সামাজিক সেবামূলক কাজ করতে নির্দেশনা রয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুতকরণ
পরিকল্পনামাফিক প্রয়োজনীয় জীবাণুনাশক প্রয়োগসহ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্ব বণ্টন, নির্দিষ্ট সময় পর পর ২০ সেকেন্ড ধরে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা এবং দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এ সংক্রান্ত পোস্টার।

কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে ব্যবস্থা
এক্ষেত্রে কন্টাক্টলেস থার্মোমিটার স্থাপন এবং তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বাড়িতে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের পথে ও অভিভাবকদের বসার স্থানে ৩ ফুট দূরত্বে করতে হবে মার্কিং। সবার জন্য মাস্কের ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে কোনো শিক্ষার্থী মাস্কের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত না থাকেন। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে হটলাইন নম্বর দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখতে হবে।

পুনরায় চালু করতে প্রচারণা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই স্কুলের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারের জন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে লিফলেট বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান স্থানে ‘নো মাস্ক নো স্কুল’ লিখে তা সবাইকে মানার নির্দেশ দিতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুকরণ
স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তুতি শেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর তারিখ ঘোষণা করতে হবে। প্রথম দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে স্বাগত জানানো, যাতে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আসতে আগ্রহী হয়। আর প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজেশনের উপকরণগুলো নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone