হাসপাতালের ১০ জরুরি পরীক্ষার ফি নির্ধারণ
দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীকে দেওয়া অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন সরকার। শুধুই অক্সিজেন নয়, কোভিড-১৯ সম্পর্কিত আরো ১০টি বিষয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফি (মূল্য তালিকা) নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই মূল্য নির্ধারণ করেছে।
এই তালিকা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উন্মুক্ত স্থানে (দৃশ্যমান) টাঙ্গাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞার স্বাক্ষরে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বা ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নতুন মূল্য তালিকা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা শিগগিরই হাইকোর্টে দাখিল করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলমের করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতবছর ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে তা উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শনের জন্য সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মূল্য তালিকা র্নিধারণ করে তা মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্ধারিত অক্সিজেনের মূল্য
নতুন নির্দেশনায় একক অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেমে ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ১২৫ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (জেনারেটর বেইজড) ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ৩শ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ৩৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (লিক্যুইড অক্সিজেন ট্যাংক বেইজড) ঘণ্টায় ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটার ব্যবহারের জন্য ২৫০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩শ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্য ৫শ টাকা নির্ধারণ করার হয়েছে।
অন্যান্য জরুরি ১০টি পরীক্ষার মূল্য
সিবিসি পরীক্ষার স্থিরকৃত সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ৪শ টাকা। এছাড়া সর্বনিম্ন ৪শ ও সর্বোচ্চ মূল্য ৬শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিআরপি পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৬শ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ থেকে ৯শ টাকা।এলএফটি পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করেছে একহাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৯৫০ থেকে একহাজার ৬শ টাকা। এস.ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৪শ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৩শ থেকে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এস ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে একহাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৮৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা।
ডি. ডিমার পরীক্ষার স্থিরমূল্য দেড় হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১১শ থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা। এস. ফেরিটিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২শ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে একহাজার টাকা থেকে ২২শ টাকা। এস.প্রোকালসিটোনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য দুইহাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫শ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা।
সিটি স্কেন (চেস্ট) এর স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৫ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা। চেস্ট এক্স-রে (এ্যানালগ)’র স্থিরমূল্য ৪শ টাকা, এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩শ থেকে ৫শ টাকা এবং চেস্ট এক্স-রে (ডিজিটাল)’র স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ টাকা। এর সর্বনিু ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ থেকে ৮শ টাকা।