বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে জিএসপির জন্য : মজীনা
ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেছেন, শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, মুজুরি কাঠামো পরিবর্তন ও শ্রম আইনে সংশোধনে বাংলাদেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা-জিএসপি পুনর্বহালের জন্য দেয়া শর্তের অনেকগুলো বাস্তবায়ন হলেও বাকিগুলোর জন্য বাংলাদেশকে নিজ উদ্যোগে কাজ করতে হবে।”
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
দেশের তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে ‘প্রাইস ট্যাগই সব নয়’ শীর্ষক এক তথ্যচিত্রের প্রিমিয়ার শো-তে বিশেষ অতিথি ছিলেন ড্যান মজীনা। তথ্যচিত্রটির চিত্রনাট্য ও নির্দেশনা দেন ফিনান্সিয়াল অ্যাক্সপ্রেস পত্রিকার সাংবাদিক মুহম্মদ মোফাজ্জল।
মজীনা বলেন, “রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টেদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এক নম্বরে জায়গা করে নেবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক হলে পোশাক শিল্পে চলমান সমস্যা থাকবে না। সমস্যার জন্য শুধু মালিক অথবা শ্রমিককে দায়ী করলে হবে না। আশির দশকে দেশে গড়ে ওঠা এ শিল্প কারখানাগুলোর অনেকগুলোই অপরিকল্পিতভাবে হয়। ফলে অনেক শর্ত মানা সম্ভব হয়নি।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রায় ৮৫ ভাগ পোশাক কারখানায় মজুরি কাঠামো বাড়ানো হয়েছে।
শ্রমিকদের মজুরি বাড়লেও বছর বছর বাড়ি ভাড়া বাড়ার কারণে তা সন্তোষজনক হয় না।”
বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় না বাড়ানোর পক্ষে মত দেন তিনি। এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান মুজিবুল হক চুন্নু।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, “জিএসপির জন্য বাংলাদেশকে দেয়া শর্তের মধ্যে পরিদর্শনের বিষয়টি ছিল। ইতিমধ্যে ৪২ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মার্চের মধ্যে আরো ২০০ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হবে।”
প্রদর্শিত ‘প্রাইস ট্যাগই সব নয়’ শীর্ষক তথ্যচিত্রে পোশাক শিল্পের কর্মীদের জীবনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এতে দেখানো হয়- কৃষক, প্রবাসী শ্রমিক আর পোশাককর্মীদের ওপর দেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থিতিশীল পোশাকশিল্পের স্বার্থে কারখানা মালিক, পোশাক ক্রেতা, বিজিএমইএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সরকারের কী ধরনের ভূমিকা থাকা উচিত তার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে।
প্রাইস ট্যাগের দেয়া দামের সঙ্গে পোশাক নির্মাণ খরচের দুস্তর ফারাক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কস্ট কাটিংয়ের যাঁতাকলে পিষ্ট শ্রমিক। এজন্য তথ্যচিত্রের নাম দেয়া হয়েছে ‘প্রাইস ট্যাগই সব নয়’। অসামান্য ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের বহুদিনের সংগ্রামের দিকটিও এতে স্থান পেয়েছে।