করোনার ভ্যাকসিন প্রদানে অগ্রাধিকারপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদানের পরিকল্পনায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্তদের বিবরণ প্রকাশ করেছেন। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর প্রশ্নের জবাবে এ বিবরণ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনাসমূহও তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনপ্রাপ্তদের কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সব সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন টিকা পাবেন। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন বিতরণের প্রথম পর্যায়ে দেশের জনসংখ্যার মোট ১ কোটি ৫০ লাখ (৮.৬৮ %) লোককে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ২ ডোজ করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে যাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে তারা হলেন- কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সব অনুমোদিত বেসরকারি ৬ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী, দুই লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্মুখসারির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন সদস্য, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ে কর্মরত ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী ৫০ হাজার, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মচারী ১ লাখ ৫০ হাজার, ৫ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি। মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবহন কর্মচারী ৪ লাখ, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর কর্মী ১ লাখ ৫০ হাজার, প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক ১ লাখ ২০ হাজার, জেলা ও উপজেলাসমূহে জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মচারী ৪ লাখ, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জনগোষ্ঠী (যক্ষ্মা, এইডস ও ক্যান্সার রোগী) ৬ লাখ ২৫ হাজার, ৬৪ থেকে ৭৯ বছর বয়স্ক জনগোষ্ঠী ১ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮, ৮০ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়স্ক জনগোষ্ঠী ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩, জাতীয় দলের খেলোয়াড় (ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ইত্যাদি) ২১ হাজার ৮৬৩, বাফার, ইমার্জেন্সি, আউটব্রেক ১ লাখ ৭০ হাজার জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ডাব্লিওএইচও’র কোভাক্স সুবিধা থেকে তার জনসংখ্যার ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৩.৪০ কোটি লোকের জন্য ৬.৮০ কোটি টিকা পাবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ভারতের উপহার হিসেবে ২০ লাখ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ক্রয়কৃত ৫০ লাখ করোনার টিকা গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকা পৌঁছেছে। ৭০ লাখ টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সিরামের সাথে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ছয় মাসে সব টিকার সরবরাহ পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রয়োজন মোতাবেক আরো টিকা ক্রয়ের জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪টি জেলা ইপিআই স্টোর এবং ৪৮৩টি উপজেলা ইপিআই স্টোরে এ ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে প্রাপ্ত ৩ কোটি বা ততোধিক ডোজ ভ্যাকসিন ছয়টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।