ভারতের সাথে এফওসি বৈঠকে পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যা প্রাধান্য পাবে অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার শুক্রবারের (২৯ জানুয়ারি) ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা, যোগাযোগ ও বাণিজ্যের মতো দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো প্রাধান্য পাবে। বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলটি এই বৈঠকে অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে। এফওসি বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন হার্ষ ভি শ্রিংলা।
বৈঠককালে উভয় পররাষ্ট্র সচিব দু’দেশের আসন্ন প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের এজেন্ডা নির্ধারণে আলোচনা করবেন। ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত ঢাকা সফরকালে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ও বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
বুধবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় সকল ইস্যু নিয়ে আলোচনা করব। আমরা যৌথ ঘোষণাও অনুসরণ করব, যা গত মাসে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে ঘোষিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে মুজিব বর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করবে।
পানি বণ্টন ইস্যুর ব্যাপারে মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক খবর শুনতে চায়। তিনি আরও বলেন, ‘তিস্তা ইস্যু’র সম্পর্কে এখন ভারতই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা অবশ্যই এই ইস্যুও সমাধান চাই। আমরা জানি, ভারতের বর্তমান সরকার ও রাজ্য সরকার এখনো তিস্তার ব্যাপাওে সম্পূর্ণ মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি।’
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা পানি বণ্টন নিয়ে শিগগিরই একটি অন্তবর্তী চুক্তিতে স্বাক্ষরের ওপর জোর দেন। ২০১১ সালে মোদি এই সমস্যা সমাধানে আন্তরিক প্রতিশ্রুতি ও অব্যহত প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করার পর এ ব্যাপারে উভয় দেশ সরকার মতৈক্যে পৌঁছে।
কালকের বৈঠকে উভয় প্রধানমন্ত্রী ছয়টি যৌথ নদী- মানু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতি, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বণ্টনের ওপর অন্তবর্তী চুক্তির কাঠামোর আশু প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এফওসি’র পর বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হবে।
এই বৈঠকে দু’পক্ষের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের (এফওসি) আসন্ন সচিব পর্যায়ের বৈঠক ও ঢাকায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়েও আলোচনা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস ট্রেইনিং একাডেমিতে বক্তব্য দেবেন এবং দিল্লিভিত্তিক রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রবিবার দেশে ফিরবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।