যেভাবে চলছে হেফাজতের দুই অংশ
দেশের আলোচিত অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের দুই গ্রুপে চলছে ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচের তৎপরতা। একপক্ষ ব্যস্ত জেলা, মহানগর কমিটি গঠন এবং শানে রেসালাহ সম্মেলন নিয়ে। আরেক পক্ষ চলছে ধীরনীতি কৌশলে। এ পক্ষটির দাবি, চমক দেখিয়ে ঘোষণা হবে হেফাজতে ইসলামের পাল্টা কমিটি। হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলায় জেলায় শানে রেসালাহ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দুই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।’
আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারী দাবিদার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘কৌশলে সংগঠন গোছানো হচ্ছে। দ্রুত হেফাজতে ইসলামের কমিটি ঘোষণা করা হবে। যাতে অনেক চমক থাকবে।’
জানা যায়, দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মাদরাসার ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা আহমদ শফী অনুসারী দাবিদার এবং বর্তমান আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলয়ের মধ্যে সম্পর্ক ‘দা-কুমড়ো’ পরিণত হয়। আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। হেফাজতে ইসলামের কমিটি থেকে বাদ পড়েন কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। আদালতে মামলা হয় জুনায়েদ বাবুনগরী বলয়ের অনেকের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার পর হেফাজতে ইসলামকে সুসংগঠিত করতে জেলা, মহানগর কমিটি গঠনের জন্য সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় শানে রেসালাহ সম্মেলন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক তৎপরতার বৃদ্ধির পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামের গঠনতন্ত্র সংশোধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্র সংশোধন করার জন্য এরই মধ্যে কাজও শুরু করেছে। এর ঠিক বিপরীত চিত্র প্রয়াত আমির আহমদ শফীর অনুসারী দাবিদারদের মধ্যে। হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটি থেকে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা বাদ পড়ার পর পরই পাল্টা হেফাজতে ইসলাম গঠনের ঘোষণা দেয়। এরপর কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকার পীর মাশায়েখদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। হেফাজতে ইসলামের পাল্টা কমিটির রূপরেখাও তৈরি করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে থমকে যায় কমিটি ঘোষণার কার্যক্রম। যদিও এ পক্ষটির দাবি ‘চমক’ দেখাতে কমিটি ঘোষণায় ধীরনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।