ইডেনে মুমিনুলরা খেলেছিল আড়াই দিন ; ইংল্যান্ড তো দেড় দিনেই শেষ!
২০১৯ সালের নভেম্বর। দুই প্রতিবেশি বাংলাদেশ আর ভারত নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে নেমেছে একে অন্যের বিপক্ষে। কলকাতার বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত সেই টেস্ট উদ্বোধনে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা সাবেক ক্রিকেটারদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। পুরো কলকাতাজুড়ে সাজসাজ রব পড়ে যায়। টেস্ট ম্যাচ হলেও দর্শকদেরও বিপুল আগ্রহ ছিল। প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ম্যাচটি শেষ হয়ে গিয়েছিল মাত্র আড়াই দিনে!
নন্দনকাননের ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির টেস্টটি ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। চারদিক থেকে ভেসে আসছিল সমালোচনা। খেলার চেয়েও সমালোচনার সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, দর্শকরা এই টেস্টটির সৌন্দর্য দেখা থেকে বঞ্চিত হলো। এরপর বিসিসিআই নাকি দর্শকদের টিকিটের টাকা ফেরত দিয়েছে বলেও শোনা গেছে। কিন্তু এবার যা হলো, তা দুই বছর আগের সেই ঘটনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। আহমেদাবাদে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি দুই দিনের কম সময়ে শেষ হয়ে গেছে!
আহমেদাবাদের মোতেরায় গতকাল শুরু হওয়া ম্যাচটি আজ ভারত জিতে নিয়েছে ১০ উইকেটে। এই ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির টেস্টের উইকেট এতটাই বাজে করা হয়েছে যে, সেখানে ব্যাটসম্যানেরা যে কয়টা রান করেছে সেটাই অনেক। প্রথম ইনিংসে ১১২ রানে অল-আউট হয় ইংল্যান্ড। জবাবে ভারত প্রথম ইনিংসে তোলে ১৪৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশরা গুটিয়ে যায় ৮১ রানে। জয়ের জন্য ভারতের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ৪৯ রানের। দ্বিতীয় দিনের তখনো ৩৬ ওভার খেলা বাকি আছে। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে ভারত। মাত্র ৭.৪ ওভারেই হেসেখেলে তারা ম্যাচ জিতে নেয় ১০ উইকেটে।
ইংল্যান্ড এবং ভারত- দুইটি দলই সাদা পোশাকের শক্তিশালী দল। এই দুটি দলের মতো এত বেশি টেস্ট ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আর কোনো দল খেলে না। তাদের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। ম্যাচ খেলার সুযোগও অনেক কম আসে। যে কয়টা টেস্ট খেলে বাংলাদেশ, পারফর্মেন্সও বাজে হয়। এমন দলটি যে ভারতের পূর্ণশক্তির দলের বিপক্ষে ধসে পড়তে পারে, তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে ভারত-ইংল্যান্ডের টেস্ট লড়াই নিশ্চয়ই দেড় দিনে শেষ হওয়া স্বাভাবিক হতে পারে না। শুধু জয়ের জন্য এমন জঘন্য উইকেট ভারত কেন বানাবে? সমালোচকেরা এবার কী বলবেন?