সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে : পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধানের মূলধারাকে সমুন্নত করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উন্নয়নের ধারায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আজ শুক্রবার বিকালে নাটোরের জেলার সিংড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিংড়া উপজেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিংড়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক শীতল কুমার সরকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নাটোর পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নাটোর জেলা শাখার সভাপতি উমা চৌধুরী জলি, সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখ, সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম সামিরুল ইসলাম, সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নাটোর জেলা শাখার সভাপতি চিত্তরঞ্জন সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার সরকার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট্রের ট্রাস্টি তপন কুমার সেন প্রমুখ।
সম্মেলনের উদ্বোধনীপর্ব শেষে সাবজেক্ট কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নতুন ত্রি-বার্ষিক কমিটি গঠন করা হয়।
সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে পাকিস্তানিদের শাসন-শোষণের বিবরণ তুলে ধরে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছিলাম। পরবর্তিতে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভাষণে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে দেশগড়ার দিক নির্দেশনা দেন এবং সংবিধানের মূলনীতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ক্ষমতাসীন সরকারগুলো বারবার ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিকে বিকৃত করে অপপ্রচার চালিয়েছে। অথচ বঙ্গবন্ধু সব সময় বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টাকেও রুদ্ধ করতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ৭৫’র পরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরে সংবিধানের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতাকে গুরুত্ব প্রদান করে বৈষম্যমুক্ত দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। সকল ধর্মের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৫০০ ডলার থেকে বেড়ে দুইহাজার ডলার ছাড়িয়েছে। করোনাকালে অনেক উন্নত দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়লেও প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনা পরিস্থিতি সফলতার সাথে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। সময়মত টিকা আমদানীর ফলে দেশে ইতোমধ্যে ৪০ লাখ মানুষ করোনার টিকা গ্রহণ করতে পেরেছেন। উন্নয়নের পথ পরিক্রমায় আমরা উন্নয়নশীল দেশের মাইলফলক স্পর্শ করেছি। ২০৩১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে হবে উন্নত দেশ-যখন দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় হবে অন্তত সাড়ে বারোহাজার ডলার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপায়ণ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর সুফল হিসেবে বর্তমানে ১৭ কোটি মানুষের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে, ১১ কোটি মানুষের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। করোনাকালে দেশের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশুনা করছে, ই-ফাইল কার্যক্রম চালুর ফলে সকল অফিসে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চলেছে। ভার্চুয়াল আদালতে বিচারিক কাজ চলেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কার্যক্রম দেশের মানুষের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করছে।