ফুলকপির স্বাস্থ্য উপকারিতা
শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি। ফুলকপির যে মেলা গুণ!শীতকালে সকলের বাড়িতেই ফুলকপির নানা রকমের পদ হয়ে থাকে। যেমন- ফুলকপির তরকারি,মাছ দিয়ে ঝোল, ফুলকপি ভাজা, ফুলকপির রোস্ট, ফুলকপি পোস্ট আরও কত কি। তবে ফুলকপি শুধু খেতে ভালোই নয় ফুলকপির রয়েছে আরও নানা গুন। আমাদের শরীরের একাধিক রোগ নিরাময়েও সাহায্য করে ফুলকপি। চলুন তবে জেনে নিই ফুলকপির উপকারিতা সম্পর্কে:
হৃদ–স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে : ফুলকপিতে সালফারের যৌগ সালফোরাফেন থাকে, যা ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখে। গবেষণা মতে, সালফোরাফেন ডিএনএ-এর মিথাইলেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা কোষের স্বাভাবিক কাজের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। সালফোরাফেন ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করতে পারে এবং টিউমারের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। অন্য এক গবেষণায় জানা যায়, ফুলকপির সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ হলুদ যোগ করলে প্রোস্টেট ক্যানসার নিরাময়ে ও প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় : ফুলকপিতে আরেকটি উপকারী যৌগ কোলাইন থাকে। এটি মস্তিষ্কের উন্নয়নে সাহায্য করে। প্রেগনেন্সির সময়ে ফুলকপি গ্রহণ করলে ভ্রূণ পরিপূর্ণতায় সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিন্তা এবং স্মৃতির উন্নয়নে সাহায্য করে কোলাইন।
শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে : ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীর পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে গ্লুকোসাইনোলেটস থাকে, যা এনজাইমকে সক্রিয় করে এবং ডিটক্স হতে সাহায্য করে।
প্রদাহ কমায় : ফুলকপিতে ইন্ডোল ৩ কার্বিনোল থাকে, যা একটি অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এটি শক্তিশালী ইনফ্লামেটরি রিঅ্যাকশন প্রতিরোধ করে।
চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী : কম ক্যালরিযুক্ত ও উচ্চমাত্রার আঁশসমৃদ্ধ ফুলকপি চুল ভালো রাখে। ত্বকের সংক্রমণও প্রতিরোধ করে।
হজমের উন্নতি ঘটায় : ফুলকপি হজমে বেশ সাহায্য করে। ওয়ার্ল্ডস হেলদিয়েস্ট ফুডস এর মতে, ফুলকপি পাকস্থলীর প্রাচীরের সুরক্ষায় সাহায্য করে। ফুলকপির সালফোরাফেন পাকস্থলীর হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে এবং পাকস্থলীর প্রাচীরে এর আবদ্ধ হওয়াকে প্রতিহত করে।
ওজন কমাতে : গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপি ওজন কমায় এবং সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ প্রতিরোধ করে।
ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ : ফুলকপিতে ভিটামিন সি, বিটাক্যারোটিন, কায়েম্ফেরোল, কোয়ারসেটিন, রুটিন, সিনামিক এসিডসহ আরো অনেক উপাদান থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। এগুলো বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে সংকুচিত করে এবং টিস্যু ও অঙ্গের ক্ষতি হওয়া প্রতিহত করে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় : চোখের যত্নে ফুলকপির কোনো তুলনা হয় না। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন ‘এ’ চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। চোখ সুস্থ রাখতে বেশি করে ফুলকপি খাওয়া উচিত।
কোলস্টেরল কমায় : এতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে : মারাত্মক ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে ফুলকপি। এতে আছে সালফোরাপেন, যা ক্যানসার কোষকে মেরে টিউমার বাড়তে দেয় না। স্তন ক্যানসার, কোলন ও মূত্রথলির ক্যানসারের জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতাও আছে ফুলকপির।