বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দীঘির শুরু
তুমি আছো তুমি নেই’ চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে চিত্রনায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া দীঘি। এরই মধ্যে জল ঘোলা হয়ে গেছে বেশ। আগামীকাল শুক্রবার সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। তবে দীঘির এমন অভিষেক চাননি বাবা সুব্রত। বলছেন, মেয়েটার শুরুটা ভালো হলো না।
ছবিতে সুব্রতও অভিনয় করেছেন। শুধু দীঘিকে কেন, বাবা সুব্রতকেও এক টাকাও পারিশ্রমিক দেননি নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। সেটা বকেয়া থেকে গেছে। এর আগে জানা যায়, দীঘির এক লাখ টাকা পারিশ্রমিক বাকি রেখেছেন।
সুব্রত বড়ুয়া ‘তুমি আছো তুমি নেই’ চলচ্চিত্র নিয়ে নানা আক্ষেপ জানালেন কালের কণ্ঠকে। আক্ষেপ করে বললেন, আমার মেয়েটা চলচ্চিত্রে এসে খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলো। এভাবে যদি একটা ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন একজন এসে এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয় তাহলে এখানে কে আসবে। নানাজন এ নিয়ে নানা কথা বলছেন।
সুব্রত বলেন, ‘আমার মেয়ের টাকা বাকি আছে। আর আমাকেও আমার পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সাথে আমি কখনো কাজ করিনি। এই প্রথমবার কাজ করতে এসে এমন নানান ঘটনার মুখোমুখি হলাম। এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ মেয়েকে নিয়ে আসে না। আমি অভিনয় ভালোবাসি, এ জন্য মেয়েকে নিয়ে এসেছি। আমার মেয়ে মেধাবী, সে পারবে। কিন্তু তাই বলে এমন বাজে একটা সিচুয়েশনের মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি।’
এই অভিনেতা আরো বলেন, শুনেছি আমার মেয়ে ও আমাদের নামে মামলা করেছে। কিন্তু এ রকম মামলার কোনো কপি আমরা হাতে পাইনি। যদি এমন কিছু হয় তাহলে তো আমাদের পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে জানলে তো কখনোই আমি মেয়েকে এ ধরনের কাজে নিয়ে আসতাম না।
দীঘির বাবার মন্তব্য, ছবিটি নিয়ে কোনো ভুল যদি করে থাকি তা শুধরানোর সুযোগও তো থাকে। এত দিন ছবিটি নিয়ে যা হলো- তা নিয়ে কথা বলতে ছবির প্রযোজক সিমি এবং তার স্বামীর নাম্বারে অনবরত কল করেছি- কিন্তু কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
পরিচালক ঝন্টুকে উদ্দেশ্য করে সুব্রত আরো বলেন, ‘তিনি সিনিয়র নির্মাতা। তার কথায় সব করেছি। ডাবিং শেষ করেও পারিশ্রমিক এখনো পরিশোধ হয়নি। আজকে না কালকে, এ রকম অনেক হয়েছে। তবুও মেনে নিয়েছি। শুধু আমার মেয়ে না। আমিও শিকার।
চিত্রনায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হতে যাওয়া দীঘি নিজের প্রথম ছবির ট্রেলার দেখে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। বিব্রত দীঘি গণমাধ্যমকে জানান, ‘ট্রেলারের যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে সিনেমা দেখতে কে প্রেক্ষাগৃহে আসবে?’ তার এই মন্তব্য শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। যার ফলে ঝন্টু মানহানি মামলার কথা জানান।
দীঘিকে পুরো পারিশ্রমিক না দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে ‘তুমি আছো তুমি নেই’-এর প্রযোজক সিমি ইসলাম কলির কাছে জানতে চাইলে তিনিও চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেন। সিমি বলেন, হ্যাঁ, দীঘির পারিশ্রমিক এক লাখ টাকা বাকি আছে। কিন্তু তার সাথে আমার চুক্তি হয়েছিল যে তার কাজ শেষ হবে, তারপর পাওনা টাকা সে নিয়ে যাবে। তার সাথে এভাবেই কথা ছিল। এক দিনের শুটিং বাকি ছিল, একটা গানের কিছু অংশ শুট করার কথা ছিল। কিন্তু দীঘি কথামতো সেই সময় দেয়নি।
দীঘির মন্তব্যে হতাশ সিমি ইসলাম কলিও। কলি বলেন, গত ২৮ তারিখ থেকে দীঘিকে পাওয়া যায়নি। দীঘির মামা আমাকে বলেছে, ছবির ট্রেলার দেখে সে নাকি ডিপ্রেশনে চলে গেছে। দীঘি নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সিনেমার এডিটিং চলাকালেও নিয়মিত দীঘির সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছে। তাকে ট্রেলার এডিটং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছি, সে আমাকে বলেছে ‘দারুণ হয়েছে!’। তাহলে আজ কী এমন হলো যে দীঘি বলছে আমার ছবিটি ভালো হয়নি।
অবশ্য দীঘির বাবা সুব্রত বলছেন, আমাকে ফোন দিয়ে বলা হলো। কয়েকটা বাক্য মোবাইলে রেকর্ড করে পাঠান। কেন? এটা তো কোনো প্রফেশনাল ওয়ার্ক নয়। ডাবিং তো করেছি। বুঝলাম এই ভয়েস হচ্ছে প্রমোশনাল বা বাণিজ্যিক। যার কারণে আমি ভয়েস দেইনি। যাই হোক কাকে আর দোষ দেব, সবাই জানে, বোঝে। আমার বলার কিছু নেই।