বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জানা-অজানা » তেঁতুলের যত গুণ

তেঁতুলের যত গুণ 

GettyImages-1147545054-2000

তেঁতুলের নাম শুনলে জিভে পানি আসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তেঁতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়। তেঁতুল বৈজ্ঞানিক নাম: Tamarindus indica, ইংরেজি নাম: Melanesian papeda এটি Fabaceae পরিবারের Tamarindus গণের অন্তর্ভুক্ত টক জাতীয় ফলের গাছ। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইউনানি, আয়ুর্বেদ, হোমিও ও অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ তৈরিতে তেঁতুলের বিচির ব্যবহার আছে। এ ধরনের কাঁচামাল ছাড়াও ঔষধি গুণের জন্য খুবই উপকারী জিনিস এটি। এর আদি নিবাস আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল। তবে সুদান থেকে বীজের মাধ্যমে বাংলাদেশে বংশ বিস্তার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশের সব জেলাতে তেঁতুল গাছ কম বেশি দেখা যায়। তবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০০৯ সালে পাহাড়ি এলাকায় চাষ উপযোগী বারি তেঁতুল-১ নামে একটি মিষ্টি তেঁতুলের জাত উদ্ভাবন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামীম শামছি জানান, চোখের ড্রোপ তৈরি থেকে পাকস্থলীর গোলযোগ, লিভার ও গল-ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে তেঁতুলের বিচি ব্যবহৃত হয়।অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়। তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ভেষজ গুণ। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, ইউনানী,হোমিও ও এলোপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করা হয়।

 

 

⇒ তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী।  তেঁতুলকে হার্টের টনিক বলা হয়। এটা লিগুমিনোসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। তেঁতুলের ফলে এসিডিক পাল্প থাকে। এটা সরাসরি খাওয়া যায় এবং জ্যাম, জেলী, আচার, সিরাপ ও পানীয় তৈরী করেও খাওয়া যায়। তেঁতুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, আঁশ, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান বিদ্যমান। তেঁতুল যেসব রোগের জন্য উপকারী তার মধ্যে-স্কার্ভি রোগ, কোষ্টবদ্ধতা, শরীর জ্বালা করা অন্যতম। এসব রোগে তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী।

⇒ তেঁতুল রক্তের কোলেস্টেরল কমায় । দেহের মেদভুঁড়ি কমায়। পেটে গ্যাস হলে তেঁতুলের শরবত খেলে ভালো হয়। তবে বেশি খেলে রক্তের চাপ কমে যেতে পারে। তবে প্রতিদিন কমপক্ষে বীজ ছাড়া আঁশসহ ২৫ গ্রাম তেঁতুল লবণ ও মিষ্টি ছাড়া ভক্ষণ করলে ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাকা তেঁতুল কফ ও বায়ুনাশক, খিদে বাড়ায় ও উষ্ণবীর্য হয়। তেঁতুল খাওয়ার পরে যদি পাতলা পায়খানা হয় তাহলে বোঝা যাবে তেঁতুল শরীরে ভাল কাজ করছে। অবশ্য একবারের বেশী পাতলা পায়খানা হবে না। পাতলা পায়খানার সাথে ফ্যাট গলে বের হয়ে যায়। পাতলা পাযখানা না হলেও উপকার হবে। যদি কেউ প্রতিদিন নিয়মিত এক ঘন্টা দ্রুত হাটে ও কমপক্ষে ২৫ গ্রাম করে তেঁতুল খায়, তাহলে তার হাটে ব্লক হতে পারবে না। তেঁতুল ভরাপেটে খাওয়াই ভাল।
জেনে নিন তেঁতুলের গুণ সম্পর্কে: 

* তেঁতুল হার্ট ভাল রাখে।

* সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে তেঁতুল। এটি কার্বোহাইড্রেট তৈরি হতে দেয় না রক্তে।

* তেঁতুল শরীরের কোলেষ্টেরল ও ফ্যাট কমায় ।

* তেঁতুল শরীরের ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও ত্বক ভাল রাখে।

* তেঁতুল এন্টিঅক্সিডেন্টের একটি ভাল উৎস যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ।

* তেঁতুল তাপমাত্রা কমিয়ে জ্বর সারায়।

* তেঁতুল ঠান্ডা লাগা রোগে উপকারী।

* তেঁতুল শরীরের পরিপাক ক্রিয়া সক্রিয় রাখে।

* তেঁতুল হজমে সাহায্য করে।

* তেঁতুল ক্ষুধা বাড়ায় ।

* তেঁতুল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

* তেঁতুল শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

* তেঁতুল জন্ডিস রোগে উপকারী।

* হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী।

* তেঁতুল রক্ত পরিস্কার করে ।

*  ভিটামিন সি, ই, বি ছাড়াও তেঁতুলে পাবেন ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আর ফাইবার। আর রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব উপাদানের সুস্বাস্থ্যের জন্য আবশ্যক।

তেঁতুল বেশি খেলে কিন্তু সেটা আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। এটি অ্যাসিডিটি বাড়ায়। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি কমে যাওয়াটাও ভালো না।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone