‘ইতিহাসের স্বার্থে ১৯ মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন’
১৯৭১ সালের ১৯ মার্চের আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যতগুলো সংগ্রাম হয়েছে তা কেবল ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা কিংবা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেসব হামলায় নিহতের সংখ্যা থাকলেও সেখানে অস্ত্র হাতে বাঙালির পাল্টা প্রতিরোধ হয়নি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯ মার্চ ১৯৭১ গাজীপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল। ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে এ দিনটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ১৯ মার্চ ১৯৭১ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে এসব কথা জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ১৯ মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরাম ও গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, গাজীপুর আর্মি ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি বাহিনী অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা ভেবেছিল, বাঙালি সৈনিকের কাছে অস্ত্র থাকা নিরাপদ না। যদিও পাকিস্তানি বাহিনী জানায়, ঢাকায় অস্ত্র সংকটের কারণে এখান থেকে অস্ত্র নিয়ে যাবে। আমরা সেদিন (১৯ মার্চ) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছি। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও সশস্ত্র গণবিদ্রোহের খবর প্রকাশিত হয়েছিল। এটা নিঃসন্দেহে স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এ গৌরবের দিনটি শুধু গাজীপুরবাসীর জন্য নয়, সমস্ত জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, যখন পাকিস্তানিরা বাঙালির স্বার্থকে উপেক্ষা করে আসছিল, তখন আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছে পরামর্শ চাই। তিনি আমাদের প্রতিহত করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ সঙ্কেত পাওয়ার পরই আমরা মানসিক ও সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত হই, পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য। আমরা যে সংগ্রাম বাহিনী তৈরি করেছিলাম, সেখানে আমি আহ্বায়ক ছিলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, আমাদের সঙ্গে ছিলেন রাজনৈতিক, শ্রমিকসহ সর্বমহল।
তিনি বলেন, ১৯ মার্চের প্রতিরোধ দিবসকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে, অন্যদেরকে এ দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে জানাতে হবে। এজন্য তিনি ইতিহাসবিদ, লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
১৯ মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য শামসুন নাহার, গাজীপুর অফিসার্স ফোরাম, ঢাকার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজহারুল হক, অধ্যাপক আবদুল বারী, বিজেআরএফের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এম এ সালাম শান্ত প্রমুখ।