বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Monday, December 23, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » খাল দখলের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউন্সিলরশিপ থাকবে না : আতিক

খাল দখলের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউন্সিলরশিপ থাকবে না : আতিক 

164513kalerkantho

কোনো কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে খাল দখল বা কোনো অপরাধ প্রমাণিত হলে তার কাউন্সিলরশিপ থাকবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় কোনো কাউন্সিলর দখল করেছেন, অবশ্যই সেই কাউন্সিলরের কাউন্সিলরশিপ বাতিল হয়ে যাবে। এমনকি দখলের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলেও কাউন্সিলরশিপ থাকবে না।

আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে এগারটায় রাজধানীর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের স্লুইচ গেইট এলাকায় খিদিরখালের ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নতুন খনন করা খালের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরকালে মেয়র এ কথা বলেন।

মেয়র আরো বলেন, গত ১৬ মার্চ উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের এই জায়গায় এসে আমি লক্ষ্য করলাম, স্লুইচ গেইট এলাকার ডানে ও বামে খিদির খাল থাকলেও মাঝখানের কানেক্টিভিটি নাই। এটি ভরাট করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এরা অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি গত মঙ্গলবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, এলাকার জনসাধারণ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এটি ভেঙে দিয়েছি। এখানে খালের স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে অন্যথায় আমাকে এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে হবে জনগণের সহায়তা নিয়ে।

রাজউকসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতি নির্দেশনা দিয়ে মেয়র বলেন, আপনাদের মানসিকতা পরিবর্তন করেন। শুধু প্লট বরাদ্দ দিলে হবে না, ঢাকা শহরে ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। তারা একটার পর একটা প্লট বরাদ্দ দিয়ে দিচ্ছে অথচ কোন ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। খালের উপর বরাদ্দ দিচ্ছে – বিষয়টি ভাবতে হবে। খাল উন্মুক্ত রাখতে হবে। খাল ভরাট করলে চলবে না। সরকারি সকল সংস্থার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে কোন কিছুর অনুমতি দেওয়ার আগে সিএস ম্যাপ, আরএস ম্যাপ দেখুন, মহানগর জরিপ দেখুন তারপর চিন্তাভাবনা করবেন জায়গার বরাদ্দ দিবেন কি দিবেন না। আপনারা হুট করে দিয়ে দিবেন আর জনগণের ভোগান্তি হবে- এটা অত্যন্ত কষ্টকর। আপনারা সরেজমিনে এসে দেখে তারপর চিন্তাভাবনা করবেন কোথায় প্লট বরাদ্দ দেবেন।

এ সময় মেয়র উপস্থিত সকলকে বলেন, দেখুন কিভাবে একটা রাস্তা সরু হয়ে গেছে। আমার অবাক লাগে কিভাবে এই খালটা বন্ধ করে দিল।  আমি আমাদের কাউন্সিলর এবং প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে বলেছি এই খালের শেষ ম্যাপ দেখে কতটুকু চওড়া সেটা দেখে নির্ণয় করতে হবে। দরকার হলে পাশের হাসপাতালের ওয়ালটিও ভাঙতে হবে। হাসপাতালের পরিচালক সম্মতি দিয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক সাধুবাদ জানিয়েছেন। আমাকে বলেছেন, অবশ্যই মেয়র সাহেব আমার এখানে যতটুকু জায়গা আছে আমি ছেড়ে দেবো। আমরা সকলের সহযোগিতায় এই উদ্ধার কাজ করতে পেরেছি এজন্য তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সমন্বিত মশক নিধন অভিযান পরিদর্শনকালে খিদির খাল এলাকায় থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি খনন করে প্রবাহ ফেরানো হয়। তিন দিন আগেও এই খালের অস্বিত্ব ছিল না। খালের উপর একটি প্রতিষ্ঠান সেলস অফিস নির্মাণ করে দখল করে রেখেছিল। সেটি গুড়িয়ে দিয়ে নতুন করে খাল বের করেন মেয়র।

নতুন খননকৃত খাল উদ্বোধনকালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, স্থানীয় ৫১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় মোহাম্মদপুর ঈদগাহ মাঠে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বিডি ক্লিন এর আয়োজনে পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধন করেন। বিডি ক্লিনের ১ হাজার ৮০০ স্বেচ্ছাসেবী সারা দিন ডিএনসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে। পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, বর্জ্য বাইরে ফেলে তার জন্য আবার কর্তৃপক্ষকে দোষ দিলে কাজ হবে না।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিজের ঘরটা পরিষ্কার রাখি, আর ময়লাটা ফেলে দিই বাইরে। সকালে দোকান খোলার পরই সব ময়লা ফেলে দেওয়া হয় কর্পোরেশনের নালায়। কিন্তু কেন আমরা এগুলো করছি? কার জন্য করছি? আপনারা ময়লা ফেলে দেবেন বাইরে, আর বিডি ক্লিন রাস্তা পরিষ্কার করবে, এটা হতে পারে না।

মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকার দুই ভবনের মাঝে ফেলে দেওয়া ময়লা-আবর্জনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন,মেথর প্যাসেজে সবাই ময়লা ছুঁড়ে ফেলে। সিটি কর্পোরেশন একাধিকবার সেই ময়লা পরিষ্কার করে দিয়েছে। তারপরও ময়লা ফেলা হয়। তারা ময়লা ফেলে দেবে, সেখানে মশা হবে, আর নগরবাসী গালি দেবে সিটি কর্পোরেশনকে; এটা হতে পারে না।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ডিএনসিসি প্রতিটি জন্মসনদের সঙ্গে একটি গাছের চারা উপহার দেবে বলে ঘোষণা দেন মেয়র। তিনি বলেন, প্রত্যেক সন্তানের নামে অভিভাবকেরা যদি একটি করে গাছ লাগান, তাহলে এই ঢাকা শহরে আর অক্সিজেনের অভাব হবে না।

বিডি ক্লিনের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য সাদেক খান, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আহমেদ, নাহিদ ইজাহার খান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone