মার্চে বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক : গণশুনানি ছাড়াই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। আগামী মাসের শুরুতেই নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বলছে, বিতরণ কোম্পানির ক্ষতি কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণশুনানি ছাড়া দাম বাড়ানো হলে আইন লঙ্ঘন হবে। এছাড়া চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানিগুলোর দেয়া প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুতের নতুন দাম নির্ধারণ করা হতে পারে। ওই সময় কোম্পানিগুলো ৯ থেকে ১২ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল।
সর্বশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এর মাত্র তিন মাস পরে বিতরণ ক্ষতি দেখিয়ে আবারো দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল পাঁচটি বিতরণ কোম্পানি। ওই সময় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন শুনানি করে আবারো দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা বাতিল হয়। বিতরণ কোম্পানিগুলোর ২০১২ সালের দেয়া পুরোনো প্রস্তাব আমলে নিয়েই এখন আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ জানান, অনেকদিন পর্যন্ত ট্যারিফ আটকে রাখা কিন্তু ভালো জিনিস না। প্রায় এক বছরেও বেশি সময় হয়ে গেছে এর মধ্যে পাঁচটি সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠান আমাদের জানিয়েছে যে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এখন আপাতত আইনের দৃষ্টিতে শুনানি না হলেও চলবে। কিন্তু গণশুনানি ছাড়াই দাম বাড়ানো বিইআরসি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন ক্যাব।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম জানান, যেটার ভর্তুকির টাকা নিয়ে নেয়া হয়েছে সেই টাকা আবার নতুন করে মূল্যহার বৃদ্ধি করার প্রশ্ন আসে না। এটার আইনি জটিলতা আছে এবং বিআরসি নিজেই নিজের আইন লঙ্ঘন করবে। ওই প্রস্তাবের ওপর আর কোনো সিদ্ধান্ত দেয়ার সুযোগ নেই।
পিডিবির কর্মকর্তারা বলেন, ভর্তুকি দেয়া হলেও বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে গিয়ে কোম্পানিগুলো এখনো লোকসান দিচ্ছে। এজন্য দাম বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা বলেন, সরকার গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ছয় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এ বছরও সমপরিমাণ ভর্তুকি দেবে।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোট সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে বিদ্যুতে খুচরা দাম ১৫ শতাংশ এবং পাইকারি দাম ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়ানো হয়।