ভারতবিরোধিতা করে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব নয় : তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর বিরোধিতাকারীদের ইন্ধন যোগাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ভারতবিরোধিতা ও ভারতের সাথে বৈরিতার যে রাজনীতি অনুসরণ করে আসছে, সেটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য সহায়ক নয়।
মন্ত্রী আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর নিজ বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে আয়োজিত সাপাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সাপাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম শাহের সভাপতিত্বে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া বেগম, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল দেখতে পেলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব প্রশ্ন তুলেছেন- ভারতের প্রধানমন্ত্রী কেন বাংলাদেশে আসছেন। প্রকৃতপক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসার বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে এর পেছনেও যে বিএনপি-জামাত, বিশেষ করে বিএনপি ইন্ধন দিয়ে আসছিল, মির্জা ফখরুল নিজেই ‘মোদি কেন আসছেন’ সে প্রশ্ন তুলে সেই গোমরটাই ফাঁস করেছেন।
অর্থাৎ বিএনপি তাদের যে ভারতবিরোধিতার রাজনীতি সেটা থেকে ফিরে আসতে পারেনি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক প্রয়োজন। বিশেষ করে যে দেশ দিয়ে আমাদের তিনদিক বেষ্টিত, সেই দেশের সাথে সুসম্পর্ক না রেখে আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতি সম্ভবপর নয়। বিএনপি যেহেতু বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না, সে কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কেন আসছেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
‘আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, এ ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন না করে বরং সঠিক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসুন; আপনারা ভারতবিরোধিতার রাজনীতি, ভারতের সাথে বৈরিতার যে রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করে আসছেন, সেটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য সহায়ক নয়’ বলেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তিন দিকে ভারত বিস্তৃত। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নে তাদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক না রেখে আমাদের দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব নয়।
আজ যে ভিডিও কনফারেন্সে আমরা দূর থেকেও সংযুক্ত হতে পারছি তার কারণ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়স্তী বছর থেকে আমরা যেমন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি, জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই ২০ বছর পর ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে পারব।
জনগণের ভালোবাসা নিয়েই আমরা দেশ পরিচালনা করতে চাই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দল যেহেতু ক্ষমতায় আছে, আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য অপরিসীম এবং ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়, আচার আচরণ এমন হতে হয় যাতে কেউ কষ্ট না পায়, কেউ বিরক্ত না হয়, জনগণ যাতে আমাদের ভালোবাসে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার তার বক্তব্যে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর লগ্নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমের সাথী হতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।