ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল
ভার্জিনিয়ার গভর্নর রালফ নর্টহ্যাম মৃত্যুদণ্ডের বিধান তুলে নেওয়ার বিলে স্বাক্ষর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ২৩তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছে ভার্জিনিয়া। খবর বিবিসি নিউজের। গভর্নর রালফ নর্টহ্যাম এ প্রসঙ্গে বলেন, এই বাতিলকরণের ফলে জাতিগত বৈষম্যের ইতিহাসের পাশাপাশি একটি ‘মৃত্যুর যন্ত্র’ বন্ধ হবে।
১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বহাল রাখার পর থেকে টেক্সাসের পর ভার্জিনিয়াতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ওই সময়ের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলোতে প্রচুর সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ২৭টি অঙ্গরাজ্যে এখনো মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এদের মধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে এই শাস্তি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় ১৭ বছর ধরে চলা একটি ফেডারেল স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছিলেন। এর ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এর মধ্যে ছয় জনের দণ্ড কার্যকর হয় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর তার দায়িত্ব ছাড়ার আগে। নির্বাচনের প্রচারণার সময় জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিধানের অবসান করবেন। অঙ্গরাজ্যগুলোকে এ জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে বাইডেন কোনো পদক্ষেপ নেননি।
ভার্জিনিয়ায় উপনিবেশ গড়ে ওঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৪শ বার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির বর্তমান ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা এই বিধান তুলে নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, এই বিধানের শিকার বেশি হয় সামঞ্জস্যহীনভাবে অন্য বর্ণের মানুষ এবং মানসিকভাবে অসুস্থ ও দরিদ্র ব্যক্তিরা। বিলে স্বাক্ষর করার সময় গভর্নর নর্টহ্যাম জানান, গত এক শতাব্দীতে অঙ্গরাজ্যের ৩৭৭টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় ২৯৬ জনই ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ১৯৪টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৭০টি দেশে মৃত্যুদণ্ডের আইন অথবা কার্যকর করা বাতিল হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই আইন তুলে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার সমালোচিত হয়েছে।