টাকার প্রয়োজনে নিজের জীবন বীমা বিক্রি করেছিলেন অমরেশ পুরী!
বলিউডের ইতিহাসে অমরীশ পুরীর জায়গাটা এখনো কেউ নিতে পারেননি । তার সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য আছে যা শুনলে আজও গায়ে কাটা দিয়ে ওঠে। বিস্মিত হতে হয় আমাদের। অমরেশ পুরি বলিউড জগতে পা রাখেন ৪০ বছর বয়সে এত দেরিতে যে কারোর ক্যারিয়ার শুরু হতে পারে সেটাই অজানা ছিল অনেকেই বলেছিলেন এই বয়সে কখনোই অমরেশ পুরী সাফল্য পাবেন না। কিন্তু পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় কোনটাই কমতি ছিল না তার মধ্যে।
দীর্ঘদিন ধরে থিয়েটারে যুক্ত ছিলেন তিনি। অমরেশ পুরির দাদা মদন পুরি অত্যন্ত জনপ্রিয় চরিত্রাভিনেতা ছিলেন। ১৯৪০ থেকে ১৯৭০সাল পর্যন্ত চুটিয়ে অভিনয় করতেন তিনি কিন্তু দাদা হওয়া সত্বেও অমরেশ পুরী সরাসরি কোনো উপকার পান নি দাদার কাছ থেকে। এমনকি কখনও সাহায্যের জন্য হাতও পাতেননি দাদার কাছে। তিনি একটা কথাই মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন। যদি কখনও বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করতে হয় তাহলে নিজেকেই চেষ্টা করতে হবে। বরাবরই অসম্ভব সাহসী ছিলেন অমরেশ পুরী। এই এই সাহস ছিলো সবার থেকে আলাদা।
পকেটে একটু টাকা-পয়সা হলেই নিজের বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন নিরুদ্দেশের পথে। টাকা পয়সা শেষ হলেই আবার ফিরে আসতেন কাজে যোগ দিতেন। টাকা জোগাড় করার জন্য নিজের লাইফ ইনসিওরেন্স বেঁচে দিয়েছিলেন অমরীশ পুরী। সেই সময়ে তার জীবন ছিল পুরোপুরি অনিশ্চিত। কিন্তু এই অনিশ্চয়তার জীবন আপন করে নিয়েছিলেন তিনি।
সত্যদেব দুবের থিয়েটার গ্রুপ থিয়েটার ইউনিট এ কাজ করার সময় তিনি বলিউডের একটি সিনেমার জন্য ডাক পেয়েছিলেন। তবে তার চরিত্র ছিলো খুব ছোট পরিসরের। এজন্য খুশি হতে পারেননি তিনি। এরপর তিনি আবারো থিয়েটারে মনোনিবেশ করলেন। মনে মনে তিনি ঠিকই করে নিয়েছিলেন ছোট চরিত্রে কখনো অভিনয় করবেন না। তার গম্ভীর কণ্ঠস্বর থিয়েটারকে সমৃদ্ধ করেছিল।
১৯৭৯ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। পৃথ্বী থিয়েটারে দিনের পর দিন মঞ্চস্থ হয়েছে তার অভিনীত নাটক। আজীবন থিয়েটারে অভিনয় পুরস্কার পেলেন তিনি। এই স্বীকৃতি তার জন্য খুলে দিয়েছে বড় দরজা। বলিউডে একাধিক সিনেমাতে অভিনয়ের সুযোগ পেতে শুরু করলেন তিনি। আজ তিনি বলিউডের ভিলেন এবং বজ্রকঠিন পিতা, এই দুই চরিত্রে অনবদ্য এক স্থান অধিকার করে নিয়েছেন। যার বিকল্প আজও তৈরি হয়নি। বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনী ছবিতে অভিনয় করার পরে ৪০ বছর বয়সে তার বলিউডের যাত্রা শুরু হয়।