পর্যবেক্ষণে ক্রিকেটাররাও
পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় কাঠগড়ায় রাসেল ডমিঙ্গো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন দুই সিরিজেও ব্যর্থতা অব্যাহত থাকলে তিনি আর বাংলাদেশ দলের হেড কোচ থাকবেন কি না, তা নিয়েও আছে ঘোর সংশয়। এই দক্ষিণ আফ্রিকানের পারফরম্যান্স মূল্যায়নের আগে অবশ্য লঙ্কানদের বিপক্ষে এপ্রিল-মের টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর মাঝে দলে তাঁর ভূমিকা আরো গভীরভাবে বিশ্লেষণের জন্যই হয়তো এবার শ্রীলঙ্কায় দুই টেস্টের সফরে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসন টিম লিডার হিসেবে জুড়ে দিয়েছে এর পরিচালক খালেদ মাহমুদকে। এই সাবেক অধিনায়কের কথায় তা মনে হওয়া অস্বাভাবিকও নয়, যখন কঠোর কোনো সিদ্ধান্তের সময়ও ঘনিয়ে আসতে চলেছে, ‘আমি তো ব্যক্তিগতভাবে জানি, রাসেল ভালো কোচ। এখন কাছ থেকে যখন আমি দেখব, তখন আরো ভালো বোঝা যাবে।’
তা বোঝার আগ পর্যন্ত দলের ব্যর্থতায় হেড কোচকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করার পক্ষপাতী নন মাহমুদ। বরং ক্রিকেটারদের পক্ষেও যে প্রয়োগক্ষমতার অভাবে কোচদের দুর্দান্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়া সম্ভব, মাথায় রাখছেন সেটিও। নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর অধিনায়ক তামিম ইকবালকেও দায় নিজেদের কাঁধেই নিতে দেখা গিয়েছিল, ‘শেখার জন্য পৃথিবীর সেরা কোচকে আপনি পেতে পারেন। তবে দিনের শেষে খেলোয়াড়দেরই বুঝতে হবে যে, কখন কী করতে হবে বা কী করা যাবে না।’
মাহমুদও গতকাল সংবাদমাধ্যমকে বললেন, ভালো পারফরম্যান্স শুধুই কোচের ওপর নির্ভরশীল নয়, ‘আমরা তো চিন্তা-ভাবনা করেই রাসেলকে নিয়েছিলাম। তিনি অবশ্যই ভালো কোচ। তবে পারফরম্যান্স কোচের ওপর নির্ভর করে না। এটি এমন একটি ব্যাপার, যা একে অন্যের পরিপূরক। পারফরম করতে হবে সবাই মিলে। খেলবে খেলোয়াড়রা, কোচরা না।’ টিম লিডার হিসেবে শ্রীলঙ্কায় মাহমুদের বিশ্লেষণী চোখ তাই খুঁজে ফিরবে ক্রিকেটারদেরও, ‘কোচ তো হাজার পরিকল্পনা দিতে পারেন। আপনি যদি মাঠে তা প্রয়োগ করতে না পারেন, তাহলে ওই পরিকল্পনা দিয়ে লাভটা কী? সুতরাং কোচ পরিকল্পনা দিতে পারেন, অনুশীলন করাতে পারেন, কিন্তু ভালো খেলতে হবে খেলোয়াড়দেরই। আবার এমন যদি হয় যে খেলোয়াড়রা ভালো খেলছে কিন্তু পরিকল্পনা ভালো হচ্ছে না, তাহলেও আবার হবে না। যেটি বললাম, এটি আসলে পরিপূরক।’ এখন গলদ আসলে কোথায়, দলের সঙ্গে থেকে দুই টেস্টের সিরিজ দেখেই নিজের সেই মূল্যায়নপত্র তৈরি করবেন মাহমুদ, ‘আমার কাছে মনে হয়, এখানে সমন্বয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। জানি না কেন এ রকম হচ্ছে, বারবার কেন হচ্ছে। কাজেই কাছাকাছি না মিশলে এ বিষয়ে মন্তব্য করা কঠিন।’
দলের সঙ্গে না থেকে গত কিছুদিন যা দেখেছেন, তাতে দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে দলের সব ক্রিকেটারকে একই সমান্তরালে দেখেননি মাহমুদ, ‘সবাই যেহেতু জাতীয় দলেরই প্রতিনিধিত্ব করছে, সবারই তাই সমান দায়িত্ব। এমন নয় যে তামিমের দায়িত্ব ১০০ আর লিটনের ১০ রান করা। তামিমের ১০০ হলে ওরও ১০০-ই হওয়া উচিত। আমি লিটনের নাম উল্লেখ করে বলছি, কিন্তু এ রকম অনেকেই আছে।’ নয় নয় করে জাতীয় দলে পাঁচ-সাত বছর পার করে দেওয়া একেকজনের কাছেও তাই সিনিয়রদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া পারফরম্যান্সের দাবি এই বিসিবি পরিচালকের, ‘কেন সিনিয়র ক্রিকেটাররাই সব দায়িত্ব নেবে? আপনি দলের অংশ হয়ে থাকলে আপনারও সমান দায়-দায়িত্ব। সুতরাং দায়িত্ব সবাইকেই নিতে হবে। এমন চিন্তা করা যাবে না যে নির্দিষ্ট কেউ ম্যাচ জেতাবে।’