৯৭ উপজেলায় ভোট চলছে
এইদেশ এইসময়, ঢাকা : চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে তা একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
প্রথম পর্যায়ে ৯৮টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৯৭টিতে। এসব উপজেলা নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, ৯৭টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১ হাজার ২৫৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪২৯ জন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৫০৫ জন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ৩২৫ জন।
এসব উপজেলায় ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন ১ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৪৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৪ জন ও মহিলা ভোটার ৮১ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩ জন। ৯৭ উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬ হাজার ৮৮৯টি ও ভোটকক্ষ ৪২ হাজার ৭৫৬টি। প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৬ হাজার ৮৮৯ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য এক জন করে মোট ৪২ হাজার ৭৫৬ জন।
নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলাগুলোতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বেশ কয়েক উপজেলায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে। সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি।
এ কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও মূলত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। এছাড়াও জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দল সমর্থিত বিপুল সংখ্যক প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। সংসদ নির্বাচনের পরপরই অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন ঘিরে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করছে। পাশাপাশি টান টান উত্তেজনা ও উৎকন্ঠাও রয়েছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে টাকার ছড়াছড়ি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চলছে বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনে। সাধারণত নির্বাচনের আগে কমিশন থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করা হলেও এবার উপজেলার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কমিশন সভা ডেকেও তা বাতিল করা হয়। দুপুরেই কমিশন ত্যাগ করেন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এর পরেই চলে যান অন্য কমিশনাররা। কমিশন থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং করা হয়নি।
প্রথম পর্যায়ে যে ৯৭ উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে সেগুলো হলো ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা, খাগড়াছড়ির রামগড়, সদর, মাটিরাংগা, মহালছড়ি, মানিকছড়ি ও পানছড়ি উপজেলা, ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা উপজেলা, মাগুরার সদর ও শ্রীপুর উপজেলা, ভোলার লালমোহন উপজেলা, মানিকগঞ্জের শিবালয়, দৌলতপুর, সিংগাইর ও সাটুরিয়া, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা, রাজবাড়ীর সদর, পাংশা ও বালিয়াকান্দি উপজেলা, পঞ্চগড়ের সদর, বোদা, আটোয়ারী ও দেবীগঞ্জ উপজেলা, রংপুরের তারাগঞ্জ, ও মিঠাপুকুর, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, ভুরুংগমারী ও উলিপুর উপজেলা, গাইবন্ধার সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, বগুড়ার দুপঁচাচিয়া, ধুনট, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও সোনাতলা উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের সদর, কাজীপুর, রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলা, মেহেরপুরের সদর উপজেলা, কুষ্টিয়া সদর ও ভেড়ামারা উপজেলা, নড়াইলের কালিয়া, জামালপুরের সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও মকসুদপুর উপজেলা, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, জজিরা, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলা, নরসিংদীর পলাশ ও বেলাবো উপজেলা, সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা, সিলেটের বিশ্বনাথ, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনহাট ও জৈয়ন্তাপুর উপজেলা, হবিগঞ্জের বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও মিরশরাই উপজেলা, নওগাঁর রানীনগর ও মহাদেবপুর উপজেলা, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, বজিতপুর ও নিকলী উপজেলা, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা, পাবনার সুজানগর, সাথিয়া ও আটঘরিয়া উপজেলা, খুলনার দিঘলিয়া ও কয়রা উপজেলা, বরিশালের গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা, দিনাজপুরের কাহারোল ও খানসামা উপজেলা, নিলফামারীর ডিমলা, সৈয়দপুর ও জলঢাকা উপজেলা, যশোরের অভয়নগর উপজেলা, নেত্রকুনার দুর্গাপুর ও কেন্দুয়া উপজেলা।
উল্লেখ্য, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বুধবার নির্বাচন হচ্ছে না। এখানে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।