বাবর অনেক বিশ্বরেকর্ড ভাঙবে : ইনজামাম
একের পর এক দারুণ সব ইনিংস খেলে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজম। দলের জয়ে রাখছেন বড় অবদান। গত বুধবার বিরাট কোহলিকে সিংহাসনচ্যুত করে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠেছেন। সেই দিনই অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনেকটা একাই হারিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের তরুণ এই অধিনায়ক। ব্যাট হাতে উত্তরসূরির এমন ছন্দে মুগ্ধ পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান ইনজামাম-উল-হক। বলেছেন, বাবরের মতো এতটা ধারাবাহিক কাউকে দেখেননি তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হাসছে বাবরের ব্যাট। সেঞ্চুরিয়নে বুধবার তিনি খেলেন টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ৪৯ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি, দেশের হয়ে যা দ্রুততম। তার ৫৯ বলে ১৫ চার ও ৪ ছক্কায় ১২২ রানের ইনিংসে পাকিস্তান ২০৪ রান তাড়া করে অনায়াসে জিতে যায়। যা টি-টোয়েন্টিতে দলটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও ফিফটি করেন বাবর। এর আগে ওয়ানডে সিরিজে করেন একটি সেঞ্চুরি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৯৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ভূমিকা রাখেন দলের জয়ে, হন ম্যাচ সেরাও।
পাকিস্তানের হয়ে ১২০ টেস্ট, ৩৭৮ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলা ইনজামাম নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বাবরের পারফরম্যান্সের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ইনজি বলেন, “পাকিস্তান দলের এমন ব্যাটিং প্রদর্শনী আমি কখনও দেখিনি। বাবরের প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। আমি বলেছিলাম, পাকিস্তানের ব্যাটিং গভীরতার অভাবে গত ম্যাচে বাবর তার উইকেট হারানো নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিল। তবে নিখুঁত সব শটে আজ সে সাবলীল ইনিংস খেলেছে, কখনোই তেড়েফুঁড়ে মারতে দেখা যায়নি তাকে। তাকে এক নম্বর ব্যাটসম্যান বলা ভুল কিছু হবে না। বাবর যে মানের ব্যাটসম্যান, সে কেবল পাকিস্তানের রেকর্ড নয়, অনেক বিশ্বরেকর্ড ভাঙবে। বাবরের মতো এমন ধারাবাহিক পারফর্ম করতে আমি কাউকে দেখিনি।”
ব্যাট হাতে বাবরের ধারাবাহিক নৈপুণ্যের প্রতিফলন পড়ছে র্যাঙ্কিংয়েও। আইসিসির তিন সংস্করণেই ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে আছেন তিনি সেরা দশে। ওয়ানডেতে গত বুধবার প্রথমবারের মতো ওঠেন শীর্ষে। ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টিতে চূড়ায় ওঠার পর দুই বছর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিলেন, এখন তার অবস্থান তিনে। টেস্টে আছেন ছয় নম্বরে।
আরো রেকর্ড দখল করতে চান বাবর
আইসিসির সর্বশেষ প্রকাশিত ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে কোহলির রেটিং পয়েন্ট ৮৫৭। অন্যদিকে বাবর আজমের রেটিং পয়েন্ট ৮৬৫। ৮২৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছেন ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা। চারে আছেন নিউজিল্যান্ডের রস টেইলর। তার পয়েন্ট ৮০১। এ ছাড়া অ্যারন ফিঞ্চ (৭৯১) পাঁচে, জনি বেয়ারস্টে (৭৮৫) ছয়ে ও ফখর জামান (৭৭৮) সাতে রয়েছেন।
দীর্ঘ ১২৫৮ দিন পর ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের রাজত্ব হারালেন কোহলি। ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ছিলেন স্যার ভিভ রিচার্ড। আর তাদের মতো দীর্ঘসময় ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকতে চান বাবর। টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও সিংহাসনে বসার স্বাদ পেয়েছেন তিনি। তবে তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে টেস্ট র্যাংকিংয়ের সিংহাসনটা দখল করা।
বাবর আজম বলেন, ‘এটি (ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ওঠা) আমার ক্যারিয়ারের আরো একটি মাইলফলক। স্যার ভিভ রিচার্ড ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৮৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এবং কোহলি ১২৫৮ দিন শীর্ষে ছিল। এ রকম দীর্ঘসময় র্যাংকিংয়ে থাকতে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবং ব্যাট হাতে ধারাবাহিক হতে হবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আগেও টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ছিলাম। তবে আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে টেস্ট র্যাংকিংয়ের নেতৃত্ব দেওয়া। যা একজন টেস্ট ব্যাটসম্যানের খ্যাতি ও দক্ষতার পুরস্কার’।