এবার বেনাপোলে খুলছে না সীমান্ত গেট
এইদেশ এইসময়, ডেস্ক : এবার বেনাপোলে খুলছে না সীমান্ত গেট। এক সময় বনগাঁর কিছু সংস্কৃতি কর্মী ‘একুশে উদযাপন কমিটি’ গড়ে অনুষ্ঠান করা শুরু করেছিলেন। তখন থেকেই গেট খুলে দেওয়ার প্রথা চালু হয়।
একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতিবারই যশোরের বেনাপোলে বসে দু’বাংলার মানুষের মিলন মেলা। বুকে কালো ব্যাজ, মুখে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…।’ ফুলে-ফুলে ছয়লাব ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড।’
কিন্তু আগামীকাল শুক্রবার মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এই দৃশ্য আর দেখা যাবে না। এতোদিন দু’দেশের সরকারি প্রতিনিধি ও মন্ত্রীরা প্রতিবেশী দেশে গিয়ে শহীদবেদিতে মালা দিতেন। সেই স্মারক বিনিময় এবং বক্তৃতা পর্বও বাতিল। ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’-এ যেখানে ভারতের মঞ্চ বাঁধা হত, বদলাচ্ছে সেই জায়গাও। বিএসএফ, শুল্ক দফতর এবং উত্তর ২৪ পরগণা পুলিশকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা আজ বৃহস্পতিবার এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এর আগে টাকিতে বিজয়া দশমীর দিন ইছামতির বুকে দু’দেশের বিসর্জন বন্ধ করে দেয় ভারতের প্রশাসন। এবার একুশের মেলামেশাও বন্ধ হলো। কারণ, মূলত নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়। একদিকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। বেড়ে গেছে সোনা পাচার। পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের ডেপুটি কমিশনার শুভেন দাশগুপ্ত বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণেই মূলত এই সিদ্ধান্ত।’ জেলার অতিরিক্ত এসপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘এবার বিশেষ সতকর্তাও থাকবে।’
জনসাধারণের জন্য সীমান্তের গেট খোলা হবে না, এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই দু’দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা বিএসএফ এবং প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশের প্রস্তাব ছিল, শুধু মন্ত্রী ও সরকারি প্রতিনিধিদের কিছুক্ষণের জন্য প্রতিবেশী দেশে যেতে দেওয়া হোক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়।
এক সময় বনগাঁর কিছু সংস্কৃতি কর্মী ‘একুশে উদযাপন কমিটি’ গড়ে অনুষ্ঠান করা শুরু করেছিলেন। তখন থেকেই গেট খুলে দেওয়ার প্রথা চালু হয়। পরে তাদের সরিয়ে সিপিএম এমপি অমিতাভ নন্দীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেয় ‘গঙ্গা-পদ্মা মৈত্রী সমিতি’। রাজ্যে পালাবদলের পরে আবার নিয়ন্ত্রণ যায় তৃণমূল প্রভাবিত ‘দুই বাংলা মৈত্রী সমিতি’র হাতে। তাদের অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আমরা এবার বাংলাদেশে ঢুকছি না। গন্ডগোলের আশঙ্কায় প্রশাসনিকভাবে বারণ করা হয়েছে। এপারে আমরা, ওপারে বাংলাদেশ অনুষ্ঠান করবে।’
শুভেনবাবু বলেন, ‘দু’পাশেই ব্যারিকেড হচ্ছে। তবে এমনভাবেই ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে, যাতে এক পার থেকে অন্য পারের অনুষ্ঠান দেখা যায়।’