বের হলো রহস্যঃ যে কারনে বাবা-মাকে খুন করে ঐশী
নিউজ ডেস্ক : আগামী সোমবারের মধ্যে বহুল আলোচিত পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে প্রধান আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে যাচ্ছে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযোগপত্রে ঐশীদের বাড়ির গৃহপরিচারিকা খাদিজা আক্তার
একই সাথে তার দুই বন্ধু জনি ও রনিকে আসামি করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হত্যকান্ডে ঐশীর জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। এদিকে ঐশী রহমানের মানষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন ও গোয়েন্দাদের হাতে পৌঁছে গেছে। ঐশী তার বাবা-মায়ের শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন জীবনযাপন করার জন্য উৎগ্রীব হয়ে উঠেছিলো। আর এ জন্য বাবা-মাকে নিজেই খুন করে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ঐশীকে হত্যাকান্ড ঘটাতে তার বন্ধুরা তাকে নানাভাবে প্ররোচিত করা বিষয়টিও অভিযোগপত্রে থাকছে বলে জানা গেছে। বখাটে বন্ধুরা তাকে দুবাইসহ বিদেশে যাওয়ার প্রলোভনও দেখায়।
অভিযোগপত্রে গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমীর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ঐশীকে সহযোগিতা করার বিষয়টি থাকছে। কফিতে ঘুমের ওষুধ সুমীর সামনেই মেশায় ঐশী। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। এ বিষয়টিকে সুমীর বিরুদ্ধে সহযোগিতা কারার অভিযোগ আনা হয়েছে অভিযোগপত্রে। বিষাক্ত কফি খাওয়ানোর পর বাবা-মা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়, তখন ঐশী তার বাবা-মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় সুমী নীরব ভুমিকায় ছিলো বলে অভিযোগপত্রে থাকছে বলে জানা গেছে। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর লাশ বাথরুমে টেনে নিতে সুমী ঐশীকে সহযোগিতা করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তার বখে যাওয়া মেয়ে ঐশী রহমানের সাথে জনি ও রনির পরিচয় হয় একটি ডিজে পার্টি থেকে। সেখানে তারা নিয়মিত যাতায়াত করত এবং মাদক গ্রহণসহ বিভিন্ন ধরণের অসামাজিক কর্মকা- চালাতো। জনি ও রনির সাথে ঐশীর শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত হয় বরে জানা গেছে। হত্যকা- ঘটানোর আগে বন্ধুরা ঐশীকে দুবাই সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রলোভন দেখায়। হত্যাকা-ের আগে এবং পরে রনি ঐশীকে আশ্রয় প্রশয় দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক আবু আল খায়ের মাতুববর বলেন, মামলার তদন্ত শেষ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী রবিবার অথবা সোমবারের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের নিজ ফ্লাট থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ৩১ আগস্ট রাজধানীর পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে ঐশী রহমান। আদালতে হত্যকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথী স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয় ঐশী রহমান।