আবার ঢাকায় ফিরছে ডিসি-১০
ডেস্ক নিউজ : যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে বোয়িং কোম্পানির ‘দ্য মিউজিয়াম অফ ফ্লাইটস’ জাদুঘরে শেষ ঠিকানা হওয়ার কথা থাকলেও যাত্রী বহনের দায়িত্বে থাকা শেষ ডিসি-১০ উড়োজাহাজটিকে ‘আপাতত’ ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক খান মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, উড়োজাহাজটি দিয়ে কি করা হবে সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আপাতত এটি বোয়িং জাদুঘরে যাচ্ছে না। অবশ্য উড়োজাহাজটি স্ক্র্যাপ করে ফেলা হতে পারে- এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
ডিসি-১০ উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার ৩১৪ জন যাত্রী নিয়ে বার্মিংহামে যাত্রা করে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা উড়াল দিয়ে উড়োজাহাজটি স্থানীয় সময় সাড়ে ৯টায় তা গন্তব্যে পৌঁছায়।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের এভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের জন্য আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি উড়োজাহাজটি দিয়ে তিনটি `সিনিক ট্যুর ফ্লাইট’ চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রতিটি ট্যুর ফ্লাইটে ১৪৪ জন যাত্রী থাকবে।
এরআগে বিমানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কেভিন ষ্টিল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সিসনিক ট্যুর এর পরে এটিকে পাঠানো হবে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের জাদুঘর ‘মিউজিয়াম অব ফ্লাইটে’।
বিমানের এক কর্মকর্তা বিডিবলেন, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কিনতে চুক্তি করে বিমান। ওই চুক্তি করার সময়ই ডিসি-১০ উড়োজাহাজটি নিজেদের জাদুঘরে রাখতে আগ্রহ দেখায় বোয়িং কর্তৃপক্ষ। ওই কর্মকর্তা বলেন, “ডিসি-১০ উড়োজাহাজগুলোর স্থায়িত্ব বোয়িংয়ের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণেই তারা উড়োজাহাজটি নিয়ে গবেষণা করতে চায়।”
১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল এয়ারক্রাফট করপোরেশন ও ডগলাস এয়ারক্রাফট কোম্পানি একীভূত হয়। পরের বছর ম্যাকডোনাল-ডগলাস কোম্পানি প্রথম ডিসি-১০ উড়োজাহাজ তৈরি করে, যা আকাশে ওড়ে ১৯৭০ সালের ২৯ অগাস্ট। ১৯৭১ সালে আমেরিকান এয়ারলাইনসের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে তিন ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই উড়োজাহাজ। ম্যাকডোনাল-ডগলাস বেসামরিক ব্যবহারের জন্য মোট ৩৮৬টি ডিসি-১০ তৈরি করে। এছাড়া সামরিক বাহিনীর জন্য করে ৬০টি।
২৭৪ আসনের পাশাপাশি ডিসি ১০ উড়োজাহাজে রয়েছে ৩০ আসনের বিজনেস ক্লাস কম্পার্টমেন্ট। এছাড়াও এটি ৩০ টন পর্যন্ত মালামাল বহনে সক্ষম।
ডিসি-১০-এর যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ এখন আর কোনো বিমান সংস্থা ব্যবহার করে না। তবে মালবাহী (কার্গো) উড়োজাহাজ হিসেবে এখনো কয়েকটি বিমান সংস্থা এটি ব্যবহার করছে।
বিমানের কাছে থাকা ডিসি-১০ গুলোর মধ্যে একটি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামে দুর্ঘটনায় পড়ে অচল হয়ে যায়। বাকি তিনটির দুটি অনেক দিন ধরে বিকল পড়ে আছে।