আমাদের রক্ষার দায় সুন্দরবনের
এবারও ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানলে শেষ ভরসা ছিল সুন্দরবনই। ভারতে তাণ্ডব চালিয়ে ইয়াস চলে গেলেও বাংলাদেশকে সেভাবে বিধ্বস্ত করেনি। তবে রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন। দেশের ৯টি জেলার ২৭ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের আঁচড় লেগেছে। পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। নিজের ক্ষতি সয়ে যে সুন্দরবন অতীতে দেশের উপকূলবাসীকে আরও বেশি ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করেছে, সেই সুন্দরবনেও এবার ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বন থেকে জোয়ারের পানিতে একে একে লোকালয়ে ভেসে এসেছে চারটি মৃত হরিণ। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে দুটি হরিণ। জলোচ্ছ্বাসে বনের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে। নোনাপানির প্লাবনে মাছের ঘের, গবাদি পশু ও মাঠের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগ সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শুরু করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে আক্রান্ত জেলাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব চাওয়া হয়েছে। হিসাব চূড়ান্ত করতে আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের ওডিশা রাজ্যে আঘাত হানার পর ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। বাংলাদেশে আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর ক্ষতি করেছে। গত বছর করোনাকালে আম্পানের ধাক্কা সামলানোর আগেই আবার জলোচ্ছ্বাসের আঘাত মোকাবিলা করতে হচ্ছে উপকূলের মানুষকে। প্রাথমিকভাবে সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান সমকালকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সব হিসাব উপস্থাপন করার পর চূড়ান্ত তথ্য জানানো হবে। আমরা তথ্য পেয়েছি অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে গেছে, সেগুলো মেরামত বা পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার মানুষের সহায়তায় সাড়ে ১৬ হাজার শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট সংশ্নিষ্ট জেলা প্রশাসকের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবী যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। যাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাদের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে স্বল্প সুদে ঋণ এবং বিনামূল্যে বীজ, চারা ও সার সরবরাহ করা হবে।