জার্মানিকে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ড
ফুটবল মাঠে ইংল্যান্ড ও জার্মানির লড়াই মানেই উত্তপ্ত এক পরিবেশ। বিশেষ করে বড় মঞ্চে জার্মানদের মুখোমুখি হলেই ইংল্যান্ডকে তাড়া করে বেড়ায় কিছু দুঃসহ স্মৃতি। ২১ বছর পর বড় টুর্নামেন্টে জার্মান বধ করলো থ্রি লায়নরা। ২-০ গোলে জিতে নিশ্চিত করলো ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল। ওয়েম্বলিতে ইতিহাস গড়লো ইংল্যান্ড। আর শেষ ষোলোতে বিদায় নিয়ে শেষ হলো জোয়াকিম লোর জার্মান অধ্যায়। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। তারপর থেকেই জার্মান যেন অধরা হয়ে ওঠে তাদের কাছে। ১৯৯৬ সালের ইউরো সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচ হেরে যায় ইংলিশরা, পেনাল্টি মিস করেছিলেন বর্তমান কোচ টিম সাউথগেট। ২০০০ সালে ইউরোর গ্রুপ পর্বে জার্মানির বিপক্ষে জিতলেও নকআউটে ওঠা হয়নি। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে তো ‘ভূত গোল’ এখনও তাড়া করে বেড়ায় ইংলিশদের। ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের শটে বল গোললাইন পেরিয়ে গেলেও গোল দেননি রেফারি। শেষ ষোলোতে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। এবার সেই প্রতিশোধ নিয়ে নিলো তারা জার্মানিকে ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় করে।শেষ ষোলোর এই ম্যাচে শুরুতে দুটি সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। ১৫ মিনিটে ডেকলান রাইস ও জন স্টোনসের যোগসাজশে রক্ষণ চিড়ে আসা বল পেয়ে ২৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শট নেন রহিম স্টার্লিং। গোলপোস্টের ডান দিকে ছুটে আসা বল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেন জার্মান গোলকিপার মানুয়েল ন্যয়ার। পরের মিনিটে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় হ্যারি ম্যাগুইরের হেড।সুযোগ তৈরি করেছিল জার্মানিও। প্রথমার্ধে তাদের একমাত্র সুযোগ ব্যর্থ করে দেন জর্ডান পিকফোর্ড। কাই হাভার্জের পাস থেকে টিমো বার্নারের শট দুর্দান্ত সেভ করেন ইংল্যান্ড গোলকিপার। বিরতির ঠিক আগে গোললাইন থেকে ট্যাকল করে হ্যারি কেইনকে হতাশ করেন জার্মান ডিফেন্ডার ম্যাটস হামেলস।বিরতির পর গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন হাভার্জ। তার উঁচু শট ছুটছিল গোলমুখে, লাফিয়ে দারুণ দক্ষতায় বল মাঠের বাইরে পাঠান পিকফোর্ড। গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে ইংল্যান্ডের প্রথম গোলে অবদান রাখেন লুক শ। ৬৯ মিনিটে বুকায়ো সাকার বদলি হয়ে মাঠে নামা জ্যাক গ্রিলিশও একটি গোল বানিয়ে দেন।ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় ৭৫ মিনিটে। গ্রিলিশের বানিয়ে দেওয়া বল শট গোলমুখের সামনে বাড়ান, স্টার্লিং এক টোকায় জালে জড়ান বল।৮১ মিনিটে স্টার্লিংয়ের ভুলে গোল খেতে বসেছিল ইংল্যান্ড। তার দুর্বল ব্যাকপাস মাঝমাঠ থেকে দখলে নেন হাভার্জ, তারপর বল বাড়ান থমাস মুলারের দিকে। বায়ার্ন মিউনিখ তারকা ঠিকঠাকভাবে বল নিয়ে পৌঁছে যান ইংলিশদের ডিবক্সে। পিকফোর্ডকে এক পেয়ে শটও নেন লক্ষ্যে। কিন্তু তাকে বিস্মিত করে বল গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে।খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট বাকি থাকতে আরেকটি গোল করে ম্যাচ হাতের মুঠোয় নেয় স্বাগতিকরা। ৮৬ মিনিটে বাঁ দিক থেকে গ্রিলিশের বাড়ানো ক্রসে নিচু হয়ে হেড করেন কেইন। এই আসরে নিজের প্রথম গোলে জয় নিশ্চিত করেন টটেনহ্যাম স্ট্রাইকার।১৯৯৬ সালের পর ইউরোতে এ নিয়ে কেবল দ্বিতীয়বার নকআউট ম্যাচ জিতলো ইংল্যান্ড। আগামী ৩ জুলাই রোমে কোয়ার্টার ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে সুইডেন কিংবা ইউক্রেনের।