বিচ্ছেদের পর প্রকাশ্যে এসে যা বললেন আমির-কিরণ
বলিউড সুপারস্টার আমির খান ও প্রযোজক কিরণ রাও সম্পর্কের ইতি টেনেছেন। গতকাল একটি বিবৃতির মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তারা। চমকে যাওয়া এ খবরের পর প্রকাশ্যে এসে জানালেন তাদের সামান্য পরিবর্তন ছাড়া সব ঠিক থাকবে। অর্থাৎ বিচ্ছেদ হলেও তাদের মধ্যে সম্মানবোধ ও যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।
রবিবার একটি গণমাধ্যমের লাইভ সাক্ষাৎকারে অংশ নেন তারা। এসময় ভক্তদের উদ্দেশে আমির বলেন, আপনাদের হয়তো খারাপ লেগেছে। ভালো লাগেনি, চমকে গেছেন। আমরা আপনাদের শুধু এটাই বলতে চাই যে, আমরা অনেক খুশি এবং আমরা একটি পরিবার। আমাদের সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু আমরা একে অপরের পাশেই আছি।
আমির ও কিরণ যৌথভাবে গড়ে তুলেছেন পানি ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা। তাদের বিচ্ছেদের পর এই সংস্থার কার্যক্রম ঠিকঠাক চলবে কি-না, তা নিয়ে অনেকের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। এই বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন আমির।
আমির খান বলেন, ‘পানি ফাউন্ডেশন আমাদের কাছে আজাদের (তাদের সন্তান) মতো। এটাকে আমরা সন্তানের মতোই লালন করব। আজাদ এবং ফাউন্ডেশনের জন্য আমরা সব সময় পরিবার হয়েই থাকব।’
সব শেষে ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া চেয়ে আমির বলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন সব সময়ে সুখে থাকতে পারি।’
এদিকে বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও আমির-কিরণের সুন্দর সম্পর্কের বিষয়টি মুগ্ধ করেছে নেটিজেনদের। বিচ্ছেদ মানেই ঘৃণা কিংবা কাদাছোড়াছুড়ি নয়- সেটা ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিলেন তারা।
বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খানের পারফেক্ট দাম্পত্য সঙ্গী বলা হতো কিরণ রাওকে। টানা ১৫ বছর জমিয়ে সংসারও করেছেন তাঁরা, কিন্তু নাহ, আর নয়। বৈবাহিক সম্পর্কে এখানেই দাঁড়ি টানলেন আমির খান-কিরণ রাও। শনিবার সকলকে অবাক করে বিবাহবিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করলেন আমির ও কিরণ।
শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে আমির ও কিরণ জানিয়েছেন, ‘এই ১৫ বছর ধরে হাসি-মজায় আমরা বহু স্মরণীয় মুহূর্ত কাটয়েছি। বিশ্বাস, সম্মান ও ভালোবাসায় আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এবার আমরা জীবনের আরও এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাই। তবে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নয়, অভিভাবক এবং পরস্পরের পরিবার হিসেবে।’
আমিরের জীবনে কিরণের আবির্ভাবও হয়েছিল হঠাৎ করেই। তখন আমির খান-রীনা দত্তের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। শেষপর্যন্ত ২০০২ সালে রীনা দত্তের সঙ্গে আমিরের ১৬ (২৯৮৬-২০০২) বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যায়। এক সাক্ষাৎকারে আমির নিজেই জানিয়েছিলেন ‘লগান’ ছবিতে কাজ করার সময়ই তাঁর আর কিরণের প্রথম আলাপ। ছবিতে আশুতোষ গোয়ারিকরের সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করছিলেন কিরণ। তবে সেসময় যে আমির ও কিরণের সম্পর্ক ভীষণই বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল তেমনটাও নয়। কিরণও ইউনিটের আর পাঁচজনের মতোই ছিলেন।
প্রথমা স্ত্রী রীনা দত্তের সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরে তিনি যখন মনোকষ্টে ছিলেন, ঠিক তখনই নাকি তাঁর কাছে ঈশ্বরের মতোই কিরণের ফোন আসে। টানা আধঘণ্টা কিরণের সঙ্গে ফোনে কথা বলে স্বস্তি বোধ করেন আমির। তারপরই ঠিক করে ফেলেন তিনি কিরণের সঙ্গেই থাকবেন।
তারপর কিরণ রাও-এর সঙ্গে টানা ৩ বছর লিভ-ইন রিলেশনশিপে ছিলেন আমির খান। ২০০৫ সালে কিরণ রাওয়ের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন অভিনেতা। ২০১১র ২৫ নভেম্বর আমির-কিরণ রাওয়ের জীবনে আসে তাঁদের সন্তান আজাদ খান। সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম হয় আজাদের।