গুছিয়ে রাখি বই
লাইফস্টাই ডেস্ক : জান্নাতুল নাইমা। ছোট বেলা থেকে বই পড়তে ভালবাসেন। বই তার একমাত্র বন্ধু। একটা বই পড়া শুরু করলে খাওয়া দাওয়া সব ছেড়ে বই পড়তে থাকেন। গত বছর মেলা থেকে নিজের পছন্দের অনেক বই কিনেছিলেন। কিন্তু বইগুলোর ঠিকমতো যত্নের অভাবে অনেক বই নষ্ট হয়ে গেছে।
বই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। নিজেকে জ্ঞানের আলোয় সাজাতে হলে বইয়ের বিকল্প নেই। বই আমাদের বিশ্বকে জানার পথ প্রশস্ত করে দেয়। বহু লেখক জ্ঞানী ব্যক্তি বই পড়ার জন্য আজীবন পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের দেশে বইপ্রেমী মানুষ নেহাত কম না।
অমর একুশে গ্রন্থ মেলা এখন শেষ পর্যায়ে। গ্রন্থপ্রেমী মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করেন থাকেন মেলার জন্য। বই মেলা আসলে বই কেনার হিড়িক পড়ে যায়। শুধু দামি দামি বই কিনে বুক সেলফে সাজিয়ে রাখলে হবে না, নিয়মিত ভালো ভালো বই পড়া যেমন উচিত, সেই সঙ্গে বইয়ের যত্ন নেওয়ারও প্রয়োজন।
অনেক পাঠক একাধিক বই কিনে থাকেন। অতঃপর অযত্নে ফেলে রাখেন। একটু ভেবে দেখেন, অসচেতনতার কারনে আপনার প্রিয় বইটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, পোকা ধরে যেতে পারে। এজন্য আমাদের মধ্যে যারা বই পড়েন, বই সাজিয়ে রাখতে ভালবাসেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় যারা বই কিনেছেন, তাদের জন্য বাংলামেইলের লাইফস্টাইল পাতায় বইয়ের যত্নের জন্য কিছু টিপস তুলে ধরা হল:
বই পড়ার সময় বা কাউকে পড়তে দিলে ওপরের কভার বা ডাস্ট জ্যাকেট সরিয়ে রাখুন। কারণ অতিমাত্রায় ব্যবহার করলে বিবর্ণ হয়ে গিয়ে বইয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।
বই পড়ার সময় বইয়ের ভাঁজ করে ভেঙে পড়বেন না, সোজা করে বই পড়লে তা বেশিদিন টেকে। অনেককে দেখা যায় খাওয়ার সময় বই পড়েন, এতে খাবারের দাগ বইয়ে লেগে যেতে পারে। এজন্য খাবার সময় বই না পড়াই উচিৎ। বই যেখানে সেখানে ফেলে রাখা উচিত নয়, সুন্দর করে আপনার ব্যবহৃত সেলফে ও বইয়ের আলমারিতে গুছিয়ে রাখুন।
কলম বা পেন্সিল দিয়ে অকারণে বইয়ে দাগ দেবেন না। বইয়ের মধ্যে ফুল বা অন্য কিছু রাখবেন না, ফুল পচে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের পাতাও পচে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বইয়ের পাতা ভাঁজ করে রাখা ঠিক নয়, চিহ্ন রাখার জন্য মার্কার ব্যবহার করতে পারলে ভাল হয়। আপনার প্রিয় বইটিকে সব সময় পানি থেকে দূরে রাখুন। বইয়ের ওপর ধুলা জমতে দেবেন না। ধুলা বালি পড়লেও শুকনো ও নরম কাপড় দিয়ে বই নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
অনেক সময় চাপাচাপি করে রাখলে বই নষ্ট হয়ে যায়, বইয়ের মধ্যে পোকামাকড়ের উপদ্রব হয়, এজন্যে বইয়ের ভিতরে ন্যাপথলিন ব্যবহার রাখুন।
বই সবসময় শুষ্ক এবং উঁচু জায়গায় রাখুন যেখানে আলো-বাতাস সহজে ঢুকতে পারে। মনে রাখবেন আর্দ্রতা বইয়ের প্রধান শত্রু।
এছাড়া ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ১৫ দিন অন্তর বইয়ের শেলফ পরিষ্কার করুন। দুর্লভ ও আপনার পছন্দের বইগুলো লেমিনেট বা বাঁধাই করে রাখতে পারেন।
নিউজপ্রিন্ট কাগজের বই বেশি পানি শোষণ করে, তাই এ কাগজের বইগুলোর দিকে আলাদা যত্ন করে নিন।
ঘরে বেশি জায়গায় থাকলে আলমারি ও রিডিং কর্নার রাখতে পারেন। এর জন্যে আসবারের দোকানে রেডিমেট ডেস্ক পাওয়া যায়।
আর চাইলে পছন্দমতো সেলফ এবং পড়ার টেবিল নিজের পছন্দ মতো তৈরি করিয়ে নিতে পারেন।
বই শুধু তাকে তুলে রাখলে তার আসল মুল্য দেওয়া হয় না। ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করুন, কিন্তু অবশ্যই ব্যবহার করুন। নিজে পড়ুন, অন্যকেও পড়তে দিন।
এভাবে বই গুছিয়ে রাখলে আপনার বইটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষ পাবে, থাকবে অক্ষত।