জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে অসম্মতি জানাতে পারবে না কোনো হাসপাতাল’
দেশের কোনো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা ওইসব প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত চিকিৎসক অসুস্থ ব্যক্তিকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে অসম্মতি জানাতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।আদালত বলেছেন, অসুস্থ ব্যক্তির তাৎক্ষণিক জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসম্মতি জানাতে পারবে না। যদি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকে, তবে সেক্ষেত্রে জরুরি সেবাসমূহ বিদ্যমান রয়েছে এমন নিকটস্থ কোনো হাসপাতালে উক্ত ব্যক্তিকে পাঠাতে হবে।
এদিকে, দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। ওই সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের জরুরি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বর্তমান অবস্থার বিস্তারিত বিবরণসহ একটি তালিকা আগামী তিন মাসের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন। মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং একাডেমি অব ল’ অ্যান্ড পলিসির (আলাপ) করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত।
আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, ব্যারিস্টার শারমিন আক্তার ও অ্যাডভোকেট খন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন। আদালত অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের ১৮ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
প্রসব বেদনায় কাতর আল্পনা নামের এক প্রসূতি নারীকে গত ৯ জানুয়ারি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল, কর্তব্যরত চিকিৎসক জরুরি স্বাস্থ্য সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য বলেন। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে প্রসূতি নারীর তীব্র প্রসব বেদনা শুরু হলে নিকটস্থ বকুলতলা মৈত্রী ক্লাবে সন্তান প্রসব করেন। এ ছাড়াও ২০১৯ সালের এপ্রিলে আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় এক প্রসূতি নারীকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানায় আজিমপুরের মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পার্কিং স্থলেই উক্ত প্রসূতি নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন। এই দুটি ঘটনাসহ আরো কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে এই রিট আবেদন করা হয়।