হাথুরুর জন্মদিনে বাংলাদেশের ক্রিকেট তাকে মিস করে?
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উত্থানের সঙ্গে যে গুটিকয়েক কোচের নাম চলে আসে, তাদের অন্যতম চন্দিকা হাথুরুসিংহে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ দলকে ভয়ডরহীন এক দলে পরিণত করেছিলেন এই শ্রীলঙ্কান কোচ। আজ ১৩ মার্চ তার জন্মদিন। ৫৩ বছরে পা দিলেন সাকিব-মুশফিকদের সাবেক এই কোচ। যিনি একাধারে বাংলাদেশের কোচ ও নির্বাচক ছিলেন। আর দল নির্বাচন থেকে শুরু করে যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ছিলেন একনায়ক।
এই একনায়কতন্ত্রের কারণেই দলে এবং বাংলাদেশের মিডিয়ার একাংশের কাছে তিনি ‘ভিলেন’ হয়ে গিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের দায়িত্ব ছেড়ে নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক বাংলাদেশি তারকা ক্রিকেটাররা বলেছিলেন, হাথুরু নাকি তেমন কোনো অবদানই রাখেননি। সেই সময়ে বাংলাদেশ দলে সেরা সব তারকা ছিলেন। এ কারণেই ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালের পাশাপাশি ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা ওয়ানডে সিরিজ জয় এসেছিল।
কোচ হিসেবে হাথুরুর সেরা সময় কেটেছে বাংলাদেশেই। নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে চাকরি খুঁইয়েছেন। আর হাথুরু চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ক্রিকেট আবারও অধারাবাহিক হয়ে পড়েছে। এখনও তারকাবহুল দল হওয়া সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই নড়বড়ে হয়ে গেছে অবস্থান। হাথুরুর আমলে দলে সবাই তার কথা মানতে বাধ্য থাকত। পরবর্তী সময়ে তেমন কোনো কোচ নির্বাচন করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সম্প্রতি কিপিং নিয়ে মুশফিক আর সোহানের মাঝে যে নাটক হলো, হাথুরুর মতো কোচ থাকলে তেমনটা হতো বলে মনে হয় না।
হাথুরু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ছিলেন কঠোর। তার যেটা মনে হতো সেটাই করতেন। এমনকী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন! এ নিয়ে তার কোনো আফসোসও ছিল না। এদেশের মানুষের কাছে ক্রিকেট একটি আবেগের নাম। কিন্তু হাথুরু ভালো করেই জানতেন, আবেগ দিয়ে ক্রিকেটে উন্নতি করা যায় না। এ কারণেও তাকে অনেকের চক্ষুশূল হতে হয়েছে। আজও তাই দেশের ক্রিকেটাঙ্গনের বড় একটি অংশ হাথুরুকে মিস করে। যখন দেখা যায়, জাতীয় দলের কোচ কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না; দল পরিচালনা করছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা; তখন হাথুরুকেই মিস করে বাংলাদেশের ক্রিকেট।