ইভানার মৃত্যু : নেপথ্যে আইনজীবীর সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক
রাজধানীর শাহবাগের পরীবাগে বহুতল বিশিষ্ট দুই ভবনের মাঝ থেকে ইভানা লায়লা চৌধুরী (৩২) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। বুধবার বিকেলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি মিরপুরের স্কলাস্টিকা স্কুলে ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইভানা মৃত্যুর পর তার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী জানান, গত বুধবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। খবর পেয়ে দুপুরে তিনি ওই বাসায় যান। তবে বাসায় যাবার পর ইভানাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাকে দুই ভবনের মাঝে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ইভানাকে উদ্ধারকারী শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ খবর পেয়ে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে দুটি ভবনের মাঝে ওই নারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। এরপর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ইভানাকে মৃত ঘোষণা করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি অবাক হলাম, ওই নারীর পরিবারের কেউ মরদেহের সঙ্গে এলো না। মনে হলো তাদের কোনো অনুভূতিও নেই। আমরাই তার মরদেহ নিয়ে এলাম। বিষয়টি একটু অন্যরকম ঘটনা মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’
স্বামীর সঙ্গে ইভানা।
এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই বিষয়ে কেউ কোনো ধারণা দিতে পারছে না। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্ত হবে নিরপেক্ষভাবে। পেছনে কোনো ঘটনা থাকলে সেটিও তদন্তে বের হয়ে আসবে।’ তবে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পারিবারিক কলহের কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। পুরো বিষয় তদন্ত করে ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঘটনার পর ওই নারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কয়েকটি স্ক্রিনশট কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে। একটি স্ক্রিনশট ওই নারীর ফেসবুক কমেন্টের। সেখানে তিনি তার স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা রয়েছে বলে জানান। সেই কমেন্টে ইভানা লেখেন, তুমি খুব ভাগ্যবান যে, তোমার স্বামীকে তুমি পাশে পেয়েছ। আমার দ্বিতীয় সন্তান অটিজমের শিকার, তার বিকাশ ঘটেছে দেরিতে। আমার নাবালক সন্তানের চ্যালেঞ্জগুলো আমাকে ধৈর্য্যশীল করেছে কিন্তু তার বাবার হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় আমার স্বামী একজন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন।