শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দাড়প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল বিএনপি : হানিফ
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) সকালে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট সেমিনার কক্ষে “বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিতে শিক্ষকদের মর্যাদা” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জনাব মাহবুব উল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জনাব নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মশিউর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আবদুস সালাম ও মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর নুরুল ইসলাম। সেমিনার লিখিত প্রবন্ধ উপস্থান করেন স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর। তাদের উপরই একটি দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে। তিনি বলেন, বিএনপি সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দাড়প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শিক্ষকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন শিক্ষাবান্ধব শেখ হাসিনা সরকার ১৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়,৩৩০ টি কলেজ, ৩২০টি হাইস্কুল,৪৫০০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে ইতিহাসের মাইলফলক স্থাপন করেছে। মাহবুব উল আলম হানিফ শিক্ষকদেরকে অপরাজনীতি থেকে দুরে থাকার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেন, এ মাস থেকেই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওর কাজ শুরু হবে। ননএমপিও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর আওতায় আনা হবে। উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও জাতির প্রয়োজনে শিক্ষার মানোন্নয়নে লক্ষ্যে শিক্ষা জাতীয়করণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন,ননএমপিও সকল প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে।
এ সেমিনারে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নিন্মোক্ত আট দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
এক.
শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান সরকারি-বেসরকারি, এমপিও-ননএমপিও বৈষম্য দ্রুততার সাথে নিরসন করে অভিন্ন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
দুই.
বর্তমান বাস্তবতা ও স্পর্শকাতরতা দূরীকরণার্থে বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সরকারী অনুরূপ বাড়ী ভাড়া ও উৎসব ভাতা নিশ্চিত করা।
তিন.
শ্রেণী কক্ষকে আরো আকষর্নীয়, মনোগ্রাহী করার জন্য শিক্ষকদের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষন নিশ্চিতকরণ।
চার.
শিক্ষকরা জাতি নির্মাণের কারিগর, অন্যান্য পেশার চেয়ে আলাদা। কাজেই তাদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নির্ধারণ করা।
পাঁচ.
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে রাজনৈতিক বিবেচনার উর্ধ্বে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী ও স্বচ্ছ মনের ব্যক্তিদের নিয়ে অন্তর্ভূক্তকরণ।
ছয়.
শিক্ষার যাবতীয় নীতিনির্ধারনের সকল স্তরে শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ।
সাত.
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বৈশি^ক দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ তৈরী করা।
আট.
বিশ্বসমাজ, পারিপাশ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও বাস্তব জ্ঞান অর্জনে সমৃদ্ধ টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে একটি আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর নতুন ও উদ্যমী প্রজন্ম সৃষ্টির জন্য “শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ” করা।