চালু হলো বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স, প্রথম শো হাউজফুল
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়ায় অত্যাধুনিক সাজসজ্জা ও সুবিধা সংবলিত ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’টি আজ থেকে চালু হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৩ টায় মাটিনি শো শুরুর দুই ঘণ্টা পূর্বেই দর্শকদের জন্য হল দেওয়া হয় প্রেক্ষাগৃহের দরজা। দুপুর দুইটার মধ্যেই ৩৫ ভাগ টিকেট বিক্রি হয়ে যায় এবং শো শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তেই হাউজফুল বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন মধুবনের পরিচালক ইউনুস রুবেল।
কলকাতার জিৎ ও মিমি চক্রবর্তী অভিনীত ‘বাজি’ সিনেমা প্রদর্শনের মাধ্যমে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করলো ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’।
আর এম ইউনুস রুবেল কালের কণ্ঠকে বলেন, মধুবন উত্তরবঙ্গের একটি আইকন সিনেপ্লেক্স হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে। আমরা এখানে সব ধরনের সিনেমা চালাবো, কারণ যে দর্শকেরা সিনেমা হলে আসতো না তারা আবার মধুবনে ফিরবে। কেননা এখানে নারী পুরুষসহ সব ধগরনের দর্শকদের জন্য ব্যবস্থা ও নানা ধরনের সুবিধা রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা হলিউডের থ্রি ডি সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থা রেখেছি। সেভাবেই প্রযুক্তিগতভাবে কার্য সম্পাদন করেছি, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে দর্শকেরা পুরোটা সময় বিনোদিত হবেন এবং জীবন্ত অনুভূতি নিয়েই ফিরে যাবেন। এখানে আসন সংখ্যা রয়েছে ৩৩৬ টি। শুক্রবার তিন এবং অন্য সব দিনে চারটি করে শো প্রদর্শিত হবে মধুবন সিনেপ্লেক্সে।’
২০১৯ সালের ঈদে চালুর কথা ছিল মধুবন সিনেপ্লেক্সের। ওই বছর আর কাজ শেষ হয়নি। পরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় মধুবনের নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়। করোনা ধকল কাটিয়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে আগামী শুক্রবার থেকে পর্দা উঠছে মধুবনের।
টিকেট মূল্য থাকছে ১০০, ২০০ ও ৩০০ টাকা তিন ক্যাটাগরিতে। শিগগির চালু হবে ই-টিকেটিং। শুরুতে একটি স্ক্রিন নিয়ে যাত্রা শুরু করছে। পরবর্তীকালে স্ক্রিন বৃদ্ধির ইচ্ছে আছে। নিচতলায় থাকছে ফুডকোর্ট এবং উপর তলায় আধুনিক সিনে থিয়েটার। আর বাইরে রয়েছে যানবাহন পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা।
পরিচালক রোকনুজ্জামান ইউনূস বলেন, ১৯৬৯ সালে ‘মধুবন সিনেমা হল’-এর ভিত্তি স্থাপন হলেও দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে চালু হয় মধুবন সিনেমা হল। ৮০-৯০ এর দশকে সিনেমার রমরমা ব্যবসা হতো। তবে ধীরে ধীরে মানুষ হল বিমুখ হয়। সর্বশেষ ‘ঢাকা অ্যাটাক’ প্রদর্শনের পর মধুবন সিনেমা হলটি আধুনিকভাবে সংস্কারের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।
১৯৭৪ সালে শাবানা-ওয়াসিম অভিনীত ইবনে মিজান পরিচালিত ‘ডাকু মনসুর’ সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করে মধুবন। তখন হলটির ধারণক্ষমতা ছিল ১০০০। মধুবনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ব্রিটিশ আর্মির অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট এ এম ইউনুস। বাবার সঙ্গে সিনেমা হলের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন ছেলে আর এম ইউনুস রুবেল। তিনিই ‘মধুবন’ হলটিকে সিনেপ্লেক্সে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছায়াছবি প্রদর্শনের পর সংস্কারকাজের জন্য বন্ধ রাখা হয় মধুবন। টানা সাড়ে তিন বছর ধরে চলে সংস্কারকাজ।