‘দালাইলামা নির্বাচনের কোনো অধিকার চীনের নেই’
পরবর্তী দালাইলামা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার চীনের নেই’। বলেছেন চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো বৌদ্ধবিহারের মঠাধ্যক্ষা গিয়াংবাং রিনপোচে। তিনি আরো বলেন, বেইজিংয়ের সম্প্রসারণবাদের নীতি মোকাবেলা করা গুরুত্বপূর্ণ এবং নয়াদিল্লিকে অবশ্যই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে।
তিব্বতের লাসার পোটালা প্যালেসের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মঠের প্রধান বলেন, তিব্বতীয় আধ্যাত্মিক নেতার উত্তরাধিকার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল বর্তমান দালাইলামা এবং তিব্বতীয় জনগণেরই আছে। এ ব্যাপারে চীনের কোনো ভূমিকা নেই।
প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চীন সরকার ধর্মে বিশ্বাস করে না। যে সরকার ধর্মে বিশ্বাস করে না সেই সরকার কিভাবে পরবর্তী দালাইলামার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে? উত্তরাধিকার পরিকল্পনা ধর্ম এবং বিশ্বাসের বিষয়; এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘পরবর্তী দালাইলামাকে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় চীনের কোনো অধিকার নেই। শুধু বর্তমান দালাইলামা এবং তার অনুসারীরাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
রিনপোচে বলেন, তিব্বতি জনগণ চীনের এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তকে কখনোই মেনে নেবে না এবং বেইজিংয়ের জড়িত হওয়ার প্রচেষ্টা তিব্বতের ঐতিহ্যকে ‘দখল’ এবং তিব্বতি জনগণের ওপর ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার প্রচেষ্টারই অংশ। ‘তিব্বতের জনগণের মন জয় করা চীনের পক্ষে কঠিন হবে। চীন তিব্বতকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। কর্তৃপক্ষ এমনকি বাইরে থেকে আসা লোকজনকে তিব্বতিদের সাথে দেখা করার অনুমতি দেয় না। সেখানে অনেক বিধি-নিষেধ রয়েছে। এবং এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে ভারতের মতো দেশগুলো তিব্বতিদের সমর্থন করে।’ বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১৪তম দালাইলামা ১৯৫৯ সাল থেকে ভারতের ধর্মশালায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। চীন জোর দিয়ে আসছে যে পরবর্তী দালাইলামার নির্বাচন চীনা ভূখণ্ডের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এ বিষয়ে তাদের একটি বক্তব্য থাকতে হবে।
মঠাধ্যক্ষ বলেন, ভারত শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বিশ্বাস করে। ভারত কোনো দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা ঘৃণা পোষণ করে না। যে সব দেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে তাদের সাথে শান্তিতে বসবাসে বিশ্বাসী। তাই চীনের সম্প্রসারণবাদ নীতির মোকাবেলা করা জরুরি।
বেইজিং অতীতে দালাইলামাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত এবং তিব্বতকে বিভক্ত করার চেষ্টা করার জন্য অভিযুক্ত করে এবং তাকে ‘বিভাজক ব্যক্তিত্ব’ বলে মনে করে। চীনের সরকারি কর্মকর্তারা এবং দালাইলামা বা তার প্রতিনিধিরা ২০১০ সালের পর আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনায় অংশ নেননি