বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » খেলা » রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হেরে গেল বাংলাদেশ

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হেরে গেল বাংলাদেশ 

173211loss

ঘরের মাঠ মিরপুর শেরে বাংলায় এবার মুদ্রার অন্য পিঠ দেখল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে এই মাঠে টানা দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা মাহমুউল্লাহ বাহিনী এবার পাকিস্তানের কাছে ধোলাই হওয়ার লজ্জায় ডুবল। আজ সোমবার সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। স্বল্প পুঁজি নিয়ে বেশ ভালোই লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে শেষ ওভারে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। কিন্তু শেষ বলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান দল।

১২৪ রান তাড়ায় নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। পেসারদের বদলে শেখ মেহেদিকে দিয়ে বোলিং শুরু করে বাংলাদেশ। রান তুলতে বেশ ধুঁকতে হয়েছে অতিথিদের। প্রথম তিন ওভারে আসে মাত্র ৯ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে বাবরের শট হাতে লাগায় মাঠ ছাড়তে হয় তাসকিন আহমেদকে। বাকি পাঁচ বল করেন নাহিদুল। ৭ম ওভারে টাইগারদের প্রথম সাফল্য এনে দেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তার বলে মোহাম্মদ নাঈমের তালুবন্দি হন ২৫ বলে ১৯ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। দলীয় ৩২ রানে পাকিস্তান প্রথম উইকেট হারায়। উইকেটে আসেন হায়দার আলী। ১০ ওভারে পাকিস্তান তোলে ৪৬ রান। একাদশ ওভারে মাঠে ফিরে ফের বোলিং করেন তাসকিন।

কঠিন উইকেটে হাত খোলার চেষ্টা করছিলেন রিজওয়ান আর হায়দার। তাদের ব্যাটে ঘুরতে থাকে রানের চাকা। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে ৪৩ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ৪০ রান করা রিজওয়ানকে বোল্ড করে দেন অভিষিক্ত শহিদুল। উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ সরফরাজ আহমেদ। হায়দারের সৌজন্যে ওই ওভারে দুটি ছক্কা হজম করতে হয় শহিদুলকে। ওভার থেকে আসে ১৬ রান। হাত খুলে দ্রুত রান তুলতে থাকেন হায়দার। শেষ ওভারে দরকার হয় ৮ রানের। ইনিংসে প্রথমবার বোলার হিসেবে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

প্রথম বলে কোনো রান হয়নি। দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন সরফরাজ আহমেদ (৬)। তৃতীয় বলে আবার উইকেট। ৩৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৫ করা হায়দার আলী নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দি হন। চতুর্থ বলটি স্ট্রেইট ড্রাইভে ছক্কা মারেন ইফতেখার। পঞ্চম বলে ইফতেখার আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়ে ইয়াসির আলীর তালুবন্দি হন। শেষ বলটি মাহমুদউল্লাহ ডেলিভারি করার পর হঠাৎ সরে যান ব্যাটার নওয়াজ। বল স্টাম্পে লাগলেও আম্পায়ার ডেড বল ঘোষণা করেন। পরে মাহমুদউল্লাহও বল করতে এসে শেষ পর্যন্ত বল না ছেড়ে একই কাণ্ড ঘটান। শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নওয়াজ। অন্যদিকে ১ ওভার বল করে ১০ রানে ৩ উইকেট নিয়েও বাংলাদেশকে জেতাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সতর্ক শুরু করেন শেখ নাঈম এবং তিন নম্বর থেকে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে শাহনেওয়াজ দাহানিকে বাউন্ডারি মারা শান্ত পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান। তার সংগ্রহ ৫ বলে ৫ রান। দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তিন নম্বরে নামেন শামীম হোসেন। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি্ও হাঁকান। শাহনেওয়াজের করা ফিরতি ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে জোড়া বাউন্ডারি। বিপরীতে নাঈম ছিলেন ধীরগতির।

এই জুটিতে যখন আশার আলো দেখছিল বাংলাদেশ, তখনই ছন্দপতন। পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার উসমান কাদিরের করা ৮ম ওভারের দ্বিতীয় বলে শামীম ধরা পড়েন ইফতেখার আহমেদের হাতে। শামীম ফিরেন ২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২২ রান করে। ৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন আফিফ। ১০ম ওভারে উসমান কাদিরকে বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন নাঈম। এরপর আফিফের থেকেও ছক্কা হজম করেন কাদির। ১০ ওভারে বাংলাদেশ করে ৫২ রান।

১৩তম ওভারে নাঈমের বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন আম্পায়ার নাকচ করলে রিভিউ নিয়েও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। ২১ বলে ২০ রান করা আফিফের বিদায়ে তৃতীয় উইকেটের পতন। ব্যাট হাতে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ১৭তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে। ১৯ তম ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মদ নাঈম। তিনি ৫০ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ৪৭ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলেন।

একই ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলা সোহান। হারিস রউফের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন ১৪ বলে ১৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে দুই ব্যাটার একপ্রান্তে চলে আসায় রান-আউট হয়ে যান আমিনুল ইসলাম (৩)। শেখ মেহেদি অপরাজিত থাকেন ৩ বলে ১ চারে ৫ রানে। বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রান। ২টি করে উইকেট নিয়েছৈন মোহাম্মদ ওয়াসিম আর উসমান কাদির। ১টি করে নিয়েছেন শাহনেওয়াজ আর হারিস রউফ।

বাংলাদেশের একাদশ : নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শহিদুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, ও তাসকিন আহমেদ।

পাকিস্তান একাদশ : বাবর আজম (অধিনায়ক), সরফরাজ আহমেদ, ইফতিখার আহমেদ, শাহনেওয়াজ দাহানি, উসমান কাদি, হায়দার আলি, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), হাসান আলি, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, হারিস রউফ।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone