প্রথম পরীক্ষায় ফেল! প্রথম দিনেই ক্ষমতা ছাড়লেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী
সুইডেনের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই পদত্যাগ করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনকে গতকাল বুধবার সুইডেনের ক্ষমতাসীন জোটের নেতা ও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
তবে তার জোটের শরিক দল সরকার থেকে সরে দাঁড়ালে এবং অ্যান্ডারসনের বাজেট প্রস্তাব পাস না হওয়ায় পদত্যাগ করেন তিনি। সংসদে বিরোধী দলের উত্থাপিত বাজেট প্রস্তাব পাস হয়। বিরোধী জোটে অভিবাসনবিরোধী কট্টর ডানপন্থী দল রয়েছে।
ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক, গ্রিনস পার্টি মন্তব্য করেছে, তারা ‘প্রথমবারের মতো কট্টর ডানপন্থীদের উত্থাপিত বাজেট’ মেনে নিতে পারছে না।
অ্যান্ডারসন সাংবাদিকদের জানান, আমি স্পিকারকে জানিয়েছি, আমি পদত্যাগ করতে চাই। তবে তিনি বলেছেন, একক দলের নেতা হিসেবে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা রয়েছে।
সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দলের এই নেতা বলেন, কোনো একটি দল জোট ছেড়ে বের হয়ে গেলে জোট সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার সাংবিধানিক একটি চর্চা রয়েছে। আমি এমন একটি সরকারের নেতৃত্ব দিতে চাই না, যার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
সংসদের স্পিকার জানিয়েছেন, দলের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানতে তিনি দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
অ্যান্ডারসনকে বুধবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করা হয়, কারণ সুইডিশ আইন অনুযায়ী বেশির ভাগ সংসদ সদস্য তার বিরুদ্ধে ভোট না দিলেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ৫৪ বছর বয়সী সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নেতাকে সংসদের একাংশ দাঁড়িয়ে সম্মান জানায়। ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি শেষ মুহূর্তে বাম দলের সঙ্গে জোট তৈরি করে। তার দল দ্য গ্রিনস পার্টির সঙ্গেও জোট অক্ষুণ্ণ রাখে।
সংসদের ৩৪৯ সদস্যের মধ্যে ১৭৪ জন অ্যান্ডারসনের বিপক্ষে ভোট দেয়। আর তার পক্ষে ভোট দেয় ১১৭ জন সংসদ সদস্য। ৫৭ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এক ভোটে বিজয়ী হন তিনি।
উপসালা শহরের সাবেক জুনিয়র সাঁতার চ্যাম্পিয়ন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৯৬ সালে, তখনকার প্রধানমন্ত্রী গোরান পেরসনের উপদেষ্টা হিসেবে। অ্যান্ডারসন গত সাত বছর সুইডেনের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বুধবার সুইডেনের সংসদ সদস্যরা ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনকে সমর্থন দেওয়ার আগ পর্যন্ত সুইডেনই ছিল একমাত্র নর্ডিক দেশ, যাদের কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী ছিল না।
তবে বুধবার সকালে সুইডেনের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেও একই দিন সূর্য ডোবার আগেই তিনি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন।