ধর্ষণ: লন্ডন পুলিশের কাছে গেলে অভিযোগই থাকে না দুই-তৃতীয়াংশের
লন্ডনে যারা ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তাদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ ভুক্তভোগী এক মাসের মধ্যে নিজেদের অভিযোগ থেকে সরে আসেন। দুই বছরে সেই হার তিন গুণ বেড়ে যায় বলে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
লন্ডনের ইনডিপেনডেন্ট ভিকটিমস কমিশনার ক্লাইরে ওয়াক্সম্যান গবেষণায় সতর্কতা প্রকাশ করেছেন যে, ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিশেষ করে নারীরা ন্যায়বিচার পাওয়ার চেষ্টা থেকে অপমানিত হয়ে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।
যারা পুলিশের কাছে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন, তাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ থেকে সরে এসেছেন। দুই বছর আগে লন্ডনে করা শেষ জরিপের ফলের তুলনায় এই হার সাত শতাংশ বেশি।
খুবই অল্প সময়ের মধ্যে অভিযোগ থেকে সরে আসার ঘটনা বাড়ছে। অভিযোগ করার ৩০ দিনের মধ্যেই তদন্ত না চাওয়ার হার ৬৪ শতাংশ। দুই বছর আগের তুলনায় এই হার ১৮ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ওয়াক্সম্যান বলেন, পুলিশের দ্বারা অভিযোগকারীর চিকিৎসা এবং ডিজিটাল ডিভাইস অনুসন্ধান সম্পর্কে ভয়ের কারণেও অনেকে অভিযোগ থেকে সরে আসে। ভুক্তভোগীরা যখন জানতে পারেন, বিচারের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের মোবাইল ফোনের সমস্ত ডেটা প্রকাশ করতে হবে, তখন তারা পিছপা হন।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অভিযোগ করার পর তারা কেন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে, সেই হার আমাদেরকে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, পুলিশ কিভাবে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছে।
কিছু ভুক্তভোগীকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে, তাদের ফোনগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। তখন তারা অভিযোগ করা থেকেই বিরত থেকেছে কিংবা অভিযোগ করলেও পরে তা তুলে নিয়েছে।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, তার মোবাইল ১৪ মাস আগে পুলিশ নিয়েছে। এখনো সেটা ফেরত দেওয়া হয়নি। অথচ অভিযুক্ত বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরেকজন জানান, শিশুকালে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলার পর ভুক্তভোগীরই ফোন জমা নিতে চেয়েছে পুলিশ। সেটাও আবার ৩৩ বছর আগের ঘটনায় অভিযোগ করতে গিয়ে ওই নারী এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
ওয়াক্সম্যান বলেন, ভুক্তভোগীদের সম্পর্কে মিথ তৈরি হয়েছে যে, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ করতে গেলে আরো বিপাকে পড়তে হয়। সে কারণে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে গেলেও একপর্যায়ে পিছপা হচ্ছে।