বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » রিক্রুটিং এজেন্সির নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা

রিক্রুটিং এজেন্সির নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা 

অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির নাম ভাঙিয়ে প্রথমে গ্রাহকদের কাছে আস্থা অর্জন করত চক্রটি, পরে তাদেরকে ফেলে দিত প্রতারণার ফাঁদে। বিদেশে পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। এমন অভিযোগে চক্রের মূল হোতাসহ দুজন সক্রিয় সদস্যকে রাজধানীর বারিধারা থেকে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচপালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. সুজন শেখ (৩৯) এবং আবুল হাশেম আমিনুল ইসলাম রনি (৪৮)। আসামিদের কাছ থেকে ১৩৮টি পাসপোর্ট, তিনটি মোবাইল ফোন, নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ধরনের নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে স্বীকার করেছেন জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। এ চক্রের মূলহোতা সুজন শেখ। আমিনুল ইসলাম তার সহযোগী। তারা দুই বছর ধরে এসব প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। যারা রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, ময়মনসিংহ, মাগুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। চক্রটি বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রায় তিন শতাধিক মানুষকে প্রতারিত করেছে। চক্রের সদস্যরা সাধারণত গার্মেন্টস, কারখানা, ড্রাইভার, সিএনজিচালক, গৃহকর্মী ইত্যাদি শ্রেণীর কর্মজীবীদের টার্গেট করত।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষদের টার্গেট করত। তাদেরকে প্রবাসে বর্তমান বেতনের দুই থেকে তিনগুণ বেতনের আশ্বাস দিত। এ ছাড়া স্বল্প খরচে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে ১৫ দিনের মধ্যে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখাত। এই চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশভেদে আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয় বলে উল্লেখ করত। এভাবে তারা অন্তত এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ধারণা করছি।খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, এই চক্রটি সাবলেটে বিভিন্ন জায়গায় অফিস ভাড়া নিত। ফলে অফিস ভাড়া কম হত এবং সহজেই অফিস পরিবর্তন করতে পারত। তারা প্রবাসী কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়/বায়ারের ওয়েবসাইট দেখে বিভিন্ন অনুমোদিত রিক্রুটিং কোম্পানির নাম ব্যবহার করত। এই রিক্রুটিং কোম্পানির নামে ভিজিডিং কার্ড, স্টাম্প ও অন্যান্য নথিপত্র বিদেশে গমনে ইচ্ছুকদের প্রদর্শন করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করত।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতারণার কৌশল হিসেবে তারা ভুয়া টিকেট, ভিসা, ভ্যাকসিন কার্ড, বিএমইটি কার্ড তৈরি করে গ্রাহকদের প্রতারিত করত। গ্রাহকদের চক্রটি জানাত, তাদের অটোসিস্টেম পদ্ধতিতে পাসপোর্ট বা এনআইডি থেকে অটো ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিনসহ অন্যান্য কার্ড তৈরি করা হয়। ফলে বিদেশে গমনের সময় কখনোই সমস্যায় পড়তে হবে না।খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, গ্রাহকদের ১৫ দিনে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে আকৃষ্ট করে পরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা করা হতো। তাদেরকে বলা হতো, ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু গ্রাহকরা এরই মধ্যে লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে তখন তারা বাকি অর্থ ধীরে ধীরে প্রদান করত। কারণ স্বল্প আয়ের এই মানুষদের অতিদ্রুত অবশিষ্ট দুই থেকে তিন লাখ টাকা যোগাড় করা কষ্টকর।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone