টোঙ্গায় প্রতিবেশের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা
সাগরতলের আগ্নেয়গিরির প্রচণ্ড অগ্ন্যুৎপাতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ টোঙ্গায় তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছেই, দেশটিকে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখেও পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। কেবল টোঙ্গা নয়, আশপাশের স্থল ও জলভাগে কয়েক বছর ধরে অগ্ন্যুৎপাতের ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে তাদের আশঙ্কা।
গত শনিবারের অগ্ন্যুৎপাতের পর টোঙ্গা ছাইয়ে ঢেকে গেছে। সেখানে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। সংকট কাটিয়ে উঠতে জোরদার তৎপরতা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যেই বিজ্ঞানীরা জানালেন সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কথা।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আগ্নেয়গিরি থেকে সালফার ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গত হচ্ছে। এ দুটি গ্যাস পানি ও অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে এসিড বৃষ্টি সৃষ্টি করে। সেই প্রসঙ্গ টেনে ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি বিশারদ শেন ক্রনিন বলেন, টোঙ্গার আশপাশে কিছু সময়ের জন্য এসিড বৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টিপাতের স্থায়িত্বের ওপর নির্ভর করছে দ্বীপটির ফসল উৎপাদন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেশি সময় ধরে এসিড বৃষ্টি হলে টোঙ্গাবাসী খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে।
স্যাটেলাইট চিত্রের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানান, অগ্ন্যুৎপাতে নিঃসৃত গ্যাস পশ্চিম দিকে উড়ে যাচ্ছে। ফলে এসিড বৃষ্টিতে টোঙ্গা নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ফিজি। এ আশঙ্কার কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ করছে এবং বৃষ্টি হলে বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে অগ্ন্যুৎপাতে বেরিয়ে আসা ছাই সাগরের প্রবাল প্রাচীরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। ইউনিভার্সিটি অব গুয়ামের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ টম শিলস জানান, প্রবাল প্রাচীর আছে, এমন বিশাল এলাকা ছাইয়ে ঢেকে গেছে এবং সম্ভবত প্রবাল প্রাচীরগুলো প্রাণ হারিয়েছে। অগ্ন্যুৎপাতের কারণে বেরিয়ে আসা প্রচুর পরিমাণে আয়রণ পানিতে মিশে প্রবাল প্রাচীরকে বিপন্ন করতে পারে বলেও জানান তিনি।
আশঙ্কা আরো আছে। টোঙ্গার উপকূল সংলগ্ন সাগরের মাছগুলো হয় মরে যাবে নয় তো অন্য কোথাও চলে যাবে। এতে টোঙ্গাবাসীর জীবন ও জীবিকা হুমকিতে পড়বে। উপকূলে আগের অবস্থা ফিরতে অথবা নতুন পরিবেশ তৈরি হতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে বলে মনে করেন নিউজিল্যান্ডের ওটাগো ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিদ মার্কো ব্রেন্না।