কোনো নির্বাচনেই আমি ষড়যন্ত্রের বাইরে ছিলাম না: আইভী
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং কোনো নির্বাচনেই ষড়যন্ত্রের বাইরে ছিলেন না বলে মন্তব্য করেছেন নাসিক নির্বাচনের সদ্য বিজয়ী মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।
আজ শনিবার (২২ জানুয়ারি) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন : জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ‘২০১১, ২০১৬ ও ২০২২ এই তিন বছরের সিটি নির্বাচনেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। যদিও আমার সরকার কক্ষমতায় আছে, তবুও প্রতিনিয়ত নানা বাধার সম্মুখীন হয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা নিয়ে তাদের ভোটে টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছি।
বিজ্ঞাপন
আমার আস্থা-ভরসার জায়গা নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ। আমি এ জন্য নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি যে নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমার সাথে আছে।
সংলাপে আরো যুক্ত ছিলেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো রওনক জাহান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার ও শাসন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, বিএনপির সাংসদ ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।
সংলাপে নিজের অভিঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘আমি সব সময় দল-মত-নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে গেছি। আমার শক্তি সাধারণ মানুষ। আমি শান্তির পক্ষে কল্যাণের পক্ষে। আমার কোনো গুন্ডা বাহিনী নেই আর থাকবেও না। আমি সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। আর এই শান্তির পক্ষেই নারায়ণগঞ্জবাসী বরাবরের মতো এবার ভোট দিয়েছেন। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বরাবরই ষড়যন্ত্রের শিকার। আমরা দল ক্ষমতায় থাকার পরও এই নির্বাচনে আমি প্রশাসনের কাছ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাইনি। বরং আমার বিরোধী প্রার্থী তৈমূর কাকা আমার থেকে বেশি সুবিধা পেয়েছেন। আমাদের দলীয় কোন্দল ছিল। সে বিষয়ে আমি কিছু বলব না। তবে সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের ভরসা আর ভালোবাসা ও বিশ্বাস আমাকে জয়ী করেছে। ‘
নারায়ণগঞ্জবাসী দীর্ঘদিন জিম্মি ছিল উল্লেখ করে আইভী বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকার সব দলের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। সব মানুষের সাথে সুসম্পর্ক। আমি আমার ভোট নিয়ে চিন্তা করি না। আমার কাজ সাধারণ মানুষের সাথে, আমি সেটাই করে যাব। শহরের মানুষের জিম্মি ছিল কিছু প্রভাবশালীর হাতে, আমি শুধু তাদের সাহস দিয়েছি। আমরা ত্বকী হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছি। সে জায়গা থেকে আমি পিছপা হব না। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘দল ক্ষমতায় থেকেও আমার অনেক কাজে বাধা। প্রকল্প দেরিতে পাস হয়। হকার মার্কেট উচ্ছেদ হয় না। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনেরও আমি কোনো সহযোগিতা পাই না। তবে এবার আশা করি সেটা পাব। ‘
নির্বাচনের দিন বুথ কমানো ও নারীদের কেন্দ্র চার তলায় দেওয়া নিয়ে আপত্তি তুলে আইভী বলেন, ‘আমি জানি না নির্বাচন কমিশন এটা কেন করল। যে কেন্দ্র বুথ হওয়ার কথা ছিল ১৮টি সেখানে গিয়ে দেখলাম বুথ হয়েছে ১০টি। মানুষ গাদাগাদি করে ভোট দিচ্ছে। নারীদের ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে চার তলায়। কেন নিচতলায় দেওয়া হলো না, এগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। ‘
এ সময় তিনি তাঁর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘এই্ শহরের যানজট পুরনো দিনের সমস্যা। একাধিকবার শহর থেকে ট্রাকস্ট্যান্ড সরানোর চেষ্টা করছি; কিন্তু তাতেও প্রশাসনের সহযোগিতা পাইনি। আমি একধরনের চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে কাজ করছি। তবে আশা করছি বিগত দিনে না করতে পারা কাজগুলো এবার আমি করতে পারব।