আমিরাত ও সৌদিতে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বাংলাদেশি আহত
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা প্রতিবেশী সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমিরাত সরকার ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই বিধ্বস্ত করার কথা জানালেও সৌদিতে বাংলাদেশিসহ দুজন সামান্য আহত হয়েছেন।
শিয়া মতাবলম্বী হুতি বিদ্রোহীরা সুন্নি প্রধান সৌদি আরবে প্রায়ই হামলা চালালেও গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো আমিরাতের রাজধানীতে ড্রোন হামলা চালায়। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে চলা ইয়েমেন সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) কর্তৃপক্ষ বলেছে, সোমবার আবুধাবিকে লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়। এক সপ্তাহ আগে রাজধানী আবুধাবিতে হুতিদের ড্রোন হামলার পর এ ঘটনা ঘটল। ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের শিয়া মতাবলম্বী হুতিরা সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নিপ্রধান সামরিক জোটের সঙ্গে লড়াই করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এ জোটের অন্যতম সদস্য। হুতিরা প্রায়ই প্রতিবেশী সৌদি আরবের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা করলেও ১৭ জানুয়ারি আমিরাতের ওপর নজিরবিহীন ড্রোন আক্রমণ চালায়।
আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আবুধাবির আশপাশে পৃথক অঞ্চলে আটকানো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্টাংশ পড়েছে। ’ এতে আরো বলা হয়, আমিরাত সব সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে, এর আগে রবিবার হুতিদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সৌদি আরবের জাজানের আহাদ আল-মাসারিয়া শিল্প এলাকায় পড়ে। এতে দুই বাসিন্দা সামান্য আহত হয়েছেন বলে হুতিবিরোধী জোট জানিয়েছে।
ইয়েমেনে ‘বৈধতা পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট’ বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সুদানি ও বাংলাদেশি বাসিন্দা আহত হয়েছেন। এই ‘নৃশংস আক্রমণে’ ওয়ার্কশপ এবং বেসামরিক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি ‘দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা’ করা হবে।
জোট বলেছে, সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ওই শিল্প এলাকায় বিভিন্ন জাতীয়তার বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে এটি হুতিদের তৃতীয় প্রচেষ্টা। সোমবার সকালের দিকে জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হুতিরা আসির প্রদেশের দাহরান আল-জানুবের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যা ধ্বংস করা হয়। এর ধ্বংসাবশেষ পড়ে এলাকার ওয়ার্কশপ এবং বেসামরিক যানবাহনের ক্ষতি হয়েছে।
সৌদি জোট আরো বলেছে, সোমবার সকালে হুতি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর ব্যবহৃত একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থাপনা জোটের হামলায় ধ্বংস হয়।
ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকার একটি কারাগারে সৌদি জোটের বিমান হামলায় ৭০ জনের বেশি নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটল। সৌদি জোট বোসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার কথা অস্বীকার করেছে। তবে আবুধাবিতে ড্রোন হামলার পর আমিরাত ও জোট উভয়ে প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেছিল।