হিজাব পরার অধিকার রক্ষায় যা বললেন সেই লাঞ্ছিত ছাত্রী
টুইটার:
মুসকান এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘আমি চিন্তিত ছিলাম না। আমি যখন কলেজে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলাম, তখনই তারা আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। কারণ, আমি বোরকা পরেছিলাম। তারা জয় শ্রীরাম বলে চিৎকার শুরু করে। আমিও আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করি। অধ্যক্ষ ও শিক্ষকেরা আমাকে সাহায্য ও রক্ষা করেছে।’
মুসকান বলেন, তিনি জানতেন, গেরুয়া উত্তরীয় পরে উত্ত্যক্তকারীদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ ছিল তাঁর ওই কলেজের শিক্ষার্থী এবং বাকি সবাই ছিল বহিরাগত।
হিজাব পরার কারণে উত্ত্যক্ত ও লাঞ্ছনার শিকার ওই মুসলিম ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হলো শিক্ষা। কিন্তু তারা আমাদের শিক্ষাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
এনডিটিভি বলছে, কর্ণাটকের কলেজগুলোতে একদিকে হিজাব পরা শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে গেরুয়া উত্তরীয় পরা মানুষের সংখ্যাও।
টুইটার:
হিজাব পরার জন্য শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, গত মাসে কর্ণাটকের উদুপি জেলায় সরকারি গার্লস পিইউ কলেজের ছয় শিক্ষার্থী এমন অভিযোগ করার পর মুসলিম ছাত্রীরা প্রতিবাদ শুরু করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই রাজ্যটিতে হিজাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
এ নিয়ে ক্রমেই রাজ্যের উদুপি, মান্ডিয়া ও শিভামোগার মতো শহরের কলেজগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী হিজাব পরার অনুমতি থাকলেও স্কুল ও কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মুসলিম ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করলে গেরুয়া উত্তরীয় পরে হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিয়ে অনেকে তাঁদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
মুসকান বলেন, ‘গত সপ্তাহে এটা শুরু হয়েছে। আমরা বোরকা ও হিজাব পরে অভ্যস্ত। হিজাব পরেই ক্লাসে যেতাম। অধ্যক্ষ কখনোই আমাদের কিছু বলেননি। কিন্তু এটা শুরু করেছে বহিরাগতরা। অধ্যক্ষ আমাদের বোরকা না পরার পরামর্শ দিলে আমরা হিজাব পরেই আমাদের প্রতিবাদ চালাতে থাকি।’
হিন্দু বন্ধুরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে মুসকান বলেন, ‘সকালের ওই ঘটনার পর সবাই বলছে, আমরা তোমার সঙ্গে আছি। নিরাপদ মনে হচ্ছে নিজেকে।’
হিজাব-বিতর্কের জেরে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই স্বয়ং। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিজেই টুইট করে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে’ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগেও তিনি সবাইকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।