বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Monday, December 23, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » যুদ্ধে ইউক্রেনের টিকে থাকার নেপথ্যে যে ৫ কারণ

যুদ্ধে ইউক্রেনের টিকে থাকার নেপথ্যে যে ৫ কারণ 

082433kalerkantho_pic

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত রুশ সেনাদের অগ্রগতি প্রতিরোধ করতে পেরেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি করার পাশাপাশি পশ্চিমা জোটের প্রশংসা কুড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তুলনায় সমরশক্তিতে বহু এগিয়ে থাকা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বাহিনীর সক্ষমতার নেপথ্যে রয়েছে ভালো প্রস্তুতি, জাতীয় সংহতি এবং রাশিয়ার ভুলের মিশেল। তবে লক্ষ্যপূরণে কোনো কিছুকেই বাধা মানবেন না—রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ ঘোষণার কারণে ভবিষ্যতে কী হবে, তা অস্পষ্ট।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরাসি জ্যেষ্ঠ সামরিক সূত্র জানান, ‘তারা (রুশ বাহিনী) প্রকৃতপক্ষে খুব বেশি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে না। একটা পর্যায়ে গিয়ে তাদের পুনর্বিন্যাস করতে হবে। তবে এটাকে ব্যর্থতা বলা যাবে না। ’

এএফপির পর্যবেক্ষণে ইউক্রেনের রাশিয়ার সেনাদের অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে দিতে পারার পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে।

প্রস্তুতি : ২০১৪ সালে আকস্মিক অভিযানে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ নিজেদের ভূখণ্ডে যুক্ত করে নিয়েছিল রাশিয়া। এ ছাড়া দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কিছু অংশ রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীর হাতে চলে যায়। এরপর পশ্চিমারা ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সহায়তা করে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীর দুই হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সহযোগী অধ্যাপক ডগলাস লন্ডন বলেন, ‘ইউক্রেনীয়রা গত আট বছর সময় ব্যয় করেছে পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হতে। ’

স্থানীয় জ্ঞান : রাশিয়া ইউক্রেন সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রের অধীনে থাকার সময়ের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির ওপর নির্ভর করেছে। তারা ইউক্রেনীয়দের অঞ্চলগত পরিচিতির সুবিধাকে খাটো করে দেখেছিল।

কলেজ অব ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক স্পেন্সার মেরেডিথ বলেন, অনিয়মিত যুদ্ধের এই পর্যায়ে দুর্বল পক্ষটি ভূখণ্ডের সুবিধা, এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান ও সামাজিক সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সুবিধার সুযোগ নিতে পারে।

সংহতি : রাশিয়ার বাহিনী রাজধানী কিয়েভের দ্বারপ্রান্তে প্রবেশ করায় জীবনের ঝুঁকি রয়েছে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির। তার এখনো রাজধানীতে অবস্থান করার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনীয়রা উজ্জীবিত। তারা প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও গভীর দৃঢ়তা দেখিয়ে যাচ্ছে।

সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই তাদের পরিবারকে পশ্চিমা দেশগুলোতে কিংবা সীমান্তের ওপারে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে সম্মুখসারিতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে।

কৌশলগত ভুল : সামরিক বিশ্লেষকরা বলেন, রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা শুরু করার পর কয়েক দিনে স্বল্পসংখ্যক স্থলসেনা পাঠিয়ে কৌশলগত ভুল করেছে। তারা স্থল ও বিমান সেনাকে একত্রে যুদ্ধে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। তবে তার পরও ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই কিয়েভ দখল করবে রাশিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর নেভাল অ্যানালিসিসের রুশ অধ্যয়ন কর্মসূচির পরিচালক মাইকেল কফম্যান বলেন, ‘যুদ্ধের শুরুতে তারা (রুশ বাহিনী) ভেবেছিল, দ্রুত কিয়েভের ভেতরে সেনা ঢুকিয়ে ফেলতে পারবে, কিন্তু শুরুতেই বেদম মার খেয়েছে তারা। ’

মনস্তাত্ত্বিক ভয় : যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া হাজার হাজার সেনাকে কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন সীমান্তে জড়ো করে সারা বিশ্বে যুদ্ধের বিপৎসংকেত পাঠিয়েছিল। রুশ সেনাদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যকই হয়তো ভেবেছিল, যে প্রতিবেশীর ওপর আক্রমণ করতে যাচ্ছে তারাও জাতিতে স্লাভ আর অনেকেরই মাতৃভাষা রুশ। নিজেদের পক্ষে ব্যাপক হতাহতও মোটেই সহায়তা করছে না রুশদের মনোবলের ক্ষেত্রে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone