দেশে তীব্র তাপপ্রবাহের আশঙ্কা, প্রভাব পড়বে কৃষিতে
গ্রীষ্মকাল আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝেমধ্যে বয়ে চলা আগাম মৃদু তাপপ্রবাহ জানান দিচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে এটা হয়তো আরো বাড়বে। এমন সময়ে উদ্বেগ বাড়ানোর তথ্য দিল আন্তর্জাতিক এক গবেষণা। এতে বলা হয়েছে, এবার তাপপ্রবাহের তীব্রতা তো বাড়বেই, তার সঙ্গে বাড়তে পারে ‘হঠাৎ খরা’।
এর শিকার হবে বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার মধ্যাঞ্চল।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ক পত্রিকা নেচার কমিউনিকেশনসে গত শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। আমেরিকার অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সাস টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এ গবেষণা চালিয়েছেন।
হঠাৎ খরার ধরন হলো, আকস্মিকভাবে শুরু হয়ে সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে কোনো বিস্তৃত এলাকার মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। মাটির আর্দ্রতা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কমে যায়। সেই মাটিতে আর কোনো ফসলই ফলানো সম্ভব হয় না।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার হঠাৎ খরার ঘন ঘন শিকার হবে ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ। আসন্ন গ্রীষ্মে হঠাৎ খরার কবলে পড়ে দুই-তিন দিনের মধ্যেই মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাবে।
এ মাটিতে কোনো ফসল উৎপাদনই সম্ভব হবে না। ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হবে মূলত কৃষিনির্ভর দেশগুলোর।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, হঠাৎ বন্যা যেমন কোনো দিনক্ষণ মেনে বা আগেভাগে আভাস দিয়ে হয় না, হঠাৎ খরাও তেমনই। আগে এ ধরনের খরা বিশ্বের কোথাও সেভাবে নজরে না এলেও গত দুই দশক ধরে এটা দেখা যাচ্ছে।
বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়ছে দ্রুতগতিতে। এরই জেরে গত দুই দশকে মূলত দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় হঠাৎ খরার তীব্রতা বেড়েছে। আর তা আগের চেয়ে অনেক ঘন ঘন হচ্ছে। ২০১২ সালে উত্তর আমেরিকার মধ্যাঞ্চলে শুধু হঠাৎ খরার কবলে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয় তিন হাজার ৫৭০ কোটি ডলার।
গবেষকরা দেখেছেন, মূলত উষ্ণায়নের গতি বেড়ে যাওয়ায় এবার সেই হঠাৎ খরা আরো কম সময়ের ব্যবধানে হবে। সেটা হতে পারে দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই; বড়জোর এক সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে।