হিজাব না থাকায় সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিলেন না ইরানের প্রেসিডেন্ট
পোশাক নিয়ে ইরানে বিক্ষোভের মধ্যেই হিজাব বিতর্ককে নতুন মাত্রা যোগ করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। হিজাব পরতে অস্বীকার করায় আমেরিকার সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎকার বাতিল করেছেন তিনি।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিনিধি ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরকে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। একটি সভায় যোগ দিতে আসা রইসি এখন নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।
বিজ্ঞাপন
নির্ধারিত সময়ে ক্রিশ্চিয়ান পৌঁছলে প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কর্মীরা তাকে হিজাব পরার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই নারী সাংবাদিক সরাসরি তা অস্বীকার করে জানান, তার ধর্ম এবং সংস্কৃতি অনুযায়ী এমন পোশাক পরার প্রয়োজন নেই।
প্রায় ৪০ মিনিট বসিয়ে রাখা হয় ক্রিশ্চিয়ান এবং তাঁর সহকারীদের। তার পর রাইসির দপ্তরের তরফে সাক্ষাৎকার বাতিলের কথা জানানো হয়। টুইটারে এ ঘটনার কথা জানিয়ে ক্রিশ্চিয়ান লিখেছেন, ‘সাক্ষাৎকার হয়নি। তাই আমরা চলে এলাম। ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন ছিল। ’ সেই সঙ্গে রইসির জন্য নির্ধারিত খালি চেয়ারের সামনে বসে প্রতীক্ষার ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি।
আমানপুর বলেছেন, এর আগে ইরানের বাইরে যখন তিনি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তখন পূর্ববর্তী কোনো রাষ্ট্রপতি এই অনুরোধ করেননি। রাইসির একজন সহযোগী তাকে বলেছেন, এমনটা ইরানের পরিস্থিতির কারণে হয়েছে।
হিজাবের নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে ইরানে আটক এক নারীর মৃত্যু নিয়ে ইরানজুড়ে বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। মাহসা আমিনি (২২) নামের এক নারী গত সপ্তাহে কোমায় চলে যান পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই। পুলিশ আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তাদের একটি গাড়ির সাথে তার মাথা লেগে ফেটে যায় বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ বলেছে তার সাথে এমন ব্যবহারের কোনো প্রমাণ নেই । আমিনির হঠাৎ হার্ট ফেইলিওর হয়েছিল।
রাজধানী তেহরানসহ সে দেশের বিভিন্ন অংশে ক্ষোভ বাড়ছে। শুরু হয়েছে সরকারি পীড়নও। এ পর্যন্ত হিজাববিরোধী আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ পেরিয়েছে।