পণ্ড ম্যাচ নিয়ে আক্ষেপ নেই বাংলাদেশের
নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকেই সঠিক দল বাছাইয়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এবারের বিশ্বকাপের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েও প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে একই চেষ্টা বহাল রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু সব ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখলেই বোঝা যায়, সেরা একাদশের ছবি বাছাই শেষ হয়নি বাংলাদেশের। গতকাল শেষ সুযোগটি ছিল।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ম্যাচটি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। তবে দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমাম জানিয়েছেন, এতে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচটি খেলার জন্য সকালে ১৪ জনের অগ্রবর্তী দল ব্রিসবেনের মাঠে গিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় দলের বাকিরা আর মাঠেই যায়নি। যাঁরা মাঠে গিয়েছিলেন, তাঁরা ইনডোরে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন করেছেন বলে জানিয়েছেন রাবীদ ইমাম, ‘যেকোনো ম্যাচের আগে দলের একটি অংশ আগেভাগে মাঠে যায়। আজ (গতকাল) সকালেও তা-ই হয়েছিল। বাকিরা মাঠে যাওয়ার আগেই ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ওরা (১৪ জন) ইনডোর করেছে। বাকিরা হোটেলেই ছিল। তা ছাড়া ম্যাচের আগে ব্যাটাররা অত বেশি অনুশীলন করতে চায় না। লাভও হয় না। ’
তবে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ পুরো দল অনুশীলন করবে। আগামীকালও অনুশীলনের সুযোগ আছে। ২৪ অক্টোবর গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে আসা দলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামার আগের এই সময়টুকু বাংলাদেশ দল কাজে লাগাতে চায় বলে জানিয়েছেন ম্যানেজার, ম্যাচ প্র্যাকটিসের ঘাটতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তিনি, ‘মনে হয় না। কারণ এখানে আমরা দুই দিন খুব ভালো অনুশীলন করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে কালকেও (আজ) প্র্যাকটিস হবে। আমরা হয়তো সেন্টার উইকেটও পাব। পরের দিনও (আগামীকাল) প্র্যাকটিস শিডিউল আছে। এটা ঠিক যে ম্যাচ প্র্যাকটিস ভিন্ন। তবে যেটুকু সুযোগ পাচ্ছি, সেটুকু কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা যায়। ’
নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে কুঁচকিতে চোট পেয়েছিলেন দারুণ ফর্মে থাকা ব্যাটার লিটন কুমার দাস। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তবে গতকালের ম্যাচে লিটনকে খেলতে দেখা যেত বলে জানিয়েছেন রাবীদ ইমাম, ‘আজকের ম্যাচে লিটন সম্ভবত খেলত। তবে ওর তো আর ম্যাচ প্র্যাকটিসের ঘাটতি নেই। রানে আছে। খেলা তো হয়নি, বলা যাচ্ছে না। তবে খেলার মতো ফিট ছিল। ও টাচে আছে। ওর ফর্ম নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তা ছাড়া ওর ফিটনেস নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। নেটে ব্যাটিং করছে। যে চোট ছিল পর্যাপ্ত সময় পাওয়ায় সেটি সেরে গেছে। ’
এদিকে মুস্তাফিজুর রহমানের বাজে ফর্ম নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে যে তাঁর বোলিং অ্যাকশনে সমস্যা ধরা পড়েছে বাংলাদেশ দলের কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরামের চোখে। সেটি সারিয়ে তোলার জন্য পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে পরামর্শও দিয়েছেন শ্রীরাম। কিন্তু এটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার, ‘মুস্তাফিজকে নিয়ে আলাদা কোনো কাজ হচ্ছে না। তা ছাড়া কারো বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কাজ করার জায়গা বিশ্বকাপ না। ’
বিশ্বকাপ কিংবা আন্তর্জাতিক ম্যাচ আসলে পারফর্ম করার জায়গা। বোলিং অ্যাকশন কিংবা ব্যাটিং টেকনিকে উন্নতির অনুশীলন হয় আন্তর্জাতিক সিরিজের মাঝের ফাঁকা সময়টায়। সেসব সময়ে আবার জাতীয় দলের হাই-প্রফাইল কোচদের বাংলাদেশে দেখা যায় না, ছুটিতে বাড়ি যান সবাই। তাতে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভুলভ্রান্তি শোধরানোর জন্য সময় মেলে আন্তর্জাতিক কোনো সিরিজের আগে করা জাতীয় দলের ক্যাম্পে। সেটুকু সময় নতুন কিছু রপ্ত করার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। তা ছাড়া খুব বেশি খেলোয়াড়কে নিজেদের মানোন্নয়নে অবসর সময়ে আলাদাভাবে খাটতে দেখা যায় না। যাঁদের দেখা যায়, তাঁরা হয় মুশফিকুর রহিম, নয়তো মাহমুদ উল্লাহ কিংবা তামিম ইকবাল। সাকিব আল হাসানও দুঃসময় থেকে বেরোনোর জন্য আলাদা অনুশীলন করেন। কিন্তু তাঁদের অনুসারীর সংখ্যা এ দেশে বিরল!