বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Monday, December 23, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » চমকপ্রদ প্রাচীন পাথর খোদাইয়ের কাজ পাওয়া গেছে ইরাকে

চমকপ্রদ প্রাচীন পাথর খোদাইয়ের কাজ পাওয়া গেছে ইরাকে 

112742Untitled-4

উত্তর ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিকরা এক চমকপ্রদ খোদাইকৃত পাথর আবিষ্কার করেছেন। প্রায় দুই হাজার ৭০০ বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন পাথরের খোদাইকাজ খুঁজে পেয়েছেন তারা। একটি মার্কিন-ইরাকি খননকারী দল মসুলে ওই নিদর্শনটি খুঁজে পেয়েছে। ২০১৬ সালে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের ধ্বংস করে দেওয়া প্রাচীন মাশকি গেট পুনর্গঠনের সময় এটি পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

মসুলে পাওয়া আটটি মার্বেল পাথরের রিলিফে  নিপুণ খোদাইয়ের মাধ্যমে যুদ্ধের দৃশ্য, দ্রাক্ষাকুঞ্জ এবং খেজুরজাতীয় গাছ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ইরাক সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও ঐতিহ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ বলেছে, শিল্পকর্মগুলো অ্যাসিরীয় রাজা সেনাকেরিবের সময়কার।

তিনি ৭০৫ থেকে ৬৮১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত প্রাচীন শহর নিনেভে শাসন করেছিলেন।
শক্তিশালী রাজা সেনাকেরিব ব্যাবিলনের বিরুদ্ধেসহ তার নানা সামরিক অভিযান এবং নিনেভে নগরের পরিধি বাড়ানোর জন্য সুপরিচিত। ইরাকে ব্যাবিলনসহ বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন কয়েকটি শহরের অবস্থা্ন। তবে বছরের পর বছর ধরে চলা অস্থিতিশীলতায় অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস, ক্ষতিগ্রস্ত বা লুণ্ঠিত হয়েছে। ইরাক-ইরান যুদ্ধ, মার্কিন সামরিক আগ্রাসন ও জঙ্গিদের তৎপরতায় ইরাকের প্রত্নসম্পদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

kalerkantho

ইরাকি প্রত্নতাত্ত্বিক দলের প্রধান ফাদেল মোহাম্মদ খোদর এএফপিকে বলেছেন, মনে করা হয়, নিদর্শনগুলো একসময় রাজার প্রাসাদের শোভাবর্ধন করত এবং পরে মাশকি গেটে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

মাশকি গেট ছিল নিনেভের বৃহত্তম তোরণগুলোর মধ্যে একটি। এটি ছিল শহরটির আকার এবং ক্ষমতার এক প্রতীক। তোরণটি ১৯৭০-এর দশকে পুনর্নির্মিত করা হয়েছিল। তবে ২০১৬ সালে আইএস জঙ্গিরা বুলডোজার দিয়ে তা ধ্বংস করে।
ফাদেল মোহাম্মদ খোদর বলেছেন, মার্বেল পাথরের স্ল্যাবগুলো তোরণে স্থাপন করার সময় সেগুলো আংশিকভাবে মাটির নিচে ছিল। সেই নিচে থাকা অংশগুলোই সংরক্ষিত রয়েছে। এখন দেখা যাওয়া খোদাইকাজগুলো সেখানেই রয়েছে। মাটির ওপরে যে অংশ ছিল তা শতাব্দীর পর শতাব্দী সময়ে মসৃণ হয়ে গেছে।

ইরাকের মসুল ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত খননকারী দলটি মাশকি গেট সাইটটি আইএস ভেঙে দেওয়ার আগে যেমন ছিল, সেই রূপ ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে।

ইরাকে ১০ হাজারেরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনস্থল পাওয়া গেছে। দেশটির প্রতিবেশী সিরিয়াও মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষের খনি। এর মধ্যে রয়েছে প্রাচীন শহর পালমিরা। আইএস ২০১৫ সালে সেখানকার একটি বিশাল প্রাচীন মন্দির ধ্বংস করেছিল।   অবশ্য শুধু জঙ্গি, ভাঙচুরকারী এবং চোরাকারবারীরাই ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তা নয়। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের পর মার্কিন বাহিনী এবং তাদের মিত্ররাও ঐতিহাসিক ব্যাবিলনের ধ্বংসাবশেষ ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। ভঙ্গুর স্থানটিতে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করেছিল তারা।

জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকোর ২০০৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা সেনাদল  এবং তাদের ঠিকাদাররা ‘মাটি খনন, কাটা ও সমতল করার মাধ্যমে শহরের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone