মোদির সঙ্গে পাল্লায় পারবেন তো নতুন কংগ্রেসপ্রধান খাড়গে?
ভারতে সর্বশেষ দুটি লোকসভা নির্বাচনে বর্তমানে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কাছে বিপর্যস্ত হয়েছে জাতীয় কংগ্রেস দল। এরপর গোলাম নবী আজাদের মতো বড় নেতা দল ত্যাগ করেন। কেউ কেউ দলে থাকলেও নীতিনির্ধারকদের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করে গেছেন।
বিজেপি থেকেও ক্রমাগত কংগ্রেসকে কটাক্ষ করা হয়েছে ‘পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি’ আখ্যা দিয়ে।
বিজ্ঞাপন
এমন প্রেক্ষাপটে গান্ধী পরিবারের সদস্যরা সরে গিয়ে দলের শীর্ষ পদে নতুন মুখ আনতে ভোটাভুটির আয়োজন করেন। নির্বাচনে কলামিস্ট ও লোকসভার সদস্য শশী থারুরকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।
১৯৬৯ সাল থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন খাড়গে। দুইবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। কর্ণাটকের গুলবার্গা থেকে ৯ বার বিধানসভার সদস্য হয়েছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন তিনি। এমন সাফল্যমণ্ডিত অতীত সত্ত্বেও খাড়গের জয়ের পর প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপিকে টক্কর দেওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে কংগ্রেসে নির্বাচন হলো তা সফল করতে পারবেন কি খাড়গে?
পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আর ১৮ মাস বাকি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপির মোকাবেলা করতে মল্লিকার্জুন খাড়গেকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ উৎরাতে হবে। প্রথমত, তাঁকে প্রমাণ করতে হবে তিনি গান্ধী পরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন, দলের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারছেন।
গান্ধী পরিবারের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে খাড়গে জানিয়েছিলেন, তিনি প্রতিটি সিদ্ধান্তে নেহরু-গান্ধী পরিবারের পরামর্শ নেবেন না। তবে দল পরিচালনায় যেহেতু তাঁদের অভিজ্ঞতা অনেক, তাই গান্ধী পরিবারের কাছে তিনি ‘নির্দেশনা’ ও ‘পরামর্শ’ চাইবেন।
দ্বিতীয়ত, খাড়গেকে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করতে হবে এবং দলের মধ্যে থাকা অসন্তুষ্টি দূর করতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক কে বেনেডিক্ট বলেছেন, খাড়গে ‘দ্বন্দ্বের সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে যথেষ্ট দক্ষ। তিনি এমন ব্যক্তি, যিনি অন্যদের সঙ্গে লড়াই করবেন না। ’
তবে কেউ কেউ ভাবছেন, দক্ষিণ ভারতের একজন রাজনীতিবিদ উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতো উত্তরের রাজ্যগুলোতে খুব বেশি প্রভাব তৈরি করতে পারবেন কি না। রাজ্য দুটিতে লোকসভার আসনসংখ্যা ১২০। এ দুই রাজ্যে এগিয়ে থাকলে লোকসভায় জয় অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
সাংবাদিক পূর্ণিমা যোশি বলেন, ‘দেশব্যাপী দলকে নতুন করে এগিয়ে নেওয়ার মতো গতিশীলতা খাড়গের নেই। তিনি শালীন ব্যক্তি এবং তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে আসা মানুষ। তবে কংগ্রেসের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে দলের মধ্যে থাকা শূন্যতা তিনি পূরণ করতে পারবেন না। ’
পূর্ণিমার মতে, মোদি-অমিত শাহ জুটিকে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা নেই খাড়গের। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের এমন একজন দরকার, যিনি তাদের (বিজেপি) ভাষায় জবাব দিতে পারবেন। যিনি বিজেপির সাজানো খেলায়ই তাদের হারাতে পারবেন। ’